জয়ন্ত পাল, দমদম, উত্তর ২৪ পরগনা: নিয়োগ দুর্নীতি ঘিরে সরগরম রাজ্য। ঠিক তখনই টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠল দমদমে। অভিযোগের তির উঠেছে পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক স্কুলের চাকরি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি এসএসসি নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় ইডি-র (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক অভিনেত্রীর দুটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা, সোনা এবং দলিল। ওই অভিনেত্রীর আরও দুটি ফ্ল্যাটের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এই সময়েই চাকরি বিক্রির অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
কী অভিযোগ:
প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের (Primary Teacher) চাকরি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ নন্দীর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ তুলেছেন দমদমেরই মল্লিক কলোনির বাসিন্দা বিশ্বনাথ পাল। বিশ্বনাথ পালের অভিযোগ, '২০১৬ সালে নোটবন্দির সময় চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছেন। শুধু আমার কাছ থেকে নয়। অনেকের কাছ থেকে টাকা তুলেছেন। আমি চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম। ৮০ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছি। তৃণমূলের মহিলা সভাপতি সর্বাণী দাস আমার থেকে টাকা নিয়েছিলেন।'
অভিযুক্তদের দাবি:
চাকরির আশ্বাসের কথা মানলেও টাকা তোলার কথা মানতে চাননি দক্ষিণ দমদম (South Dumdum) পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা তৃণমূল (TMC) কংগ্রেস সভাপতি সর্বাণী দাস। তিনি বলেন, 'চাকরি হবে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। টাকা নেওয়া হয়নি। কাউন্সিলর বলেছিল চাকরি দেবে। আমি বলেছিলাম যদি চাকরি হয় তাহলে যোগাযোগ করুন। চাকরির নামে টাকা তুলিনি।' যে সময়ের ঘটনা নিয়ে অভিযোগ। সেই সময়ে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন বরুণ নন্দী। তিনি এখন ওই পুরসভারই ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, 'কোনও প্রমাণ আছে কি? প্রমাণ থাকলে দেখাক।' অভিযোগকারী ব্যক্তি একটি চেক দেখিয়ে দাবি করেছিলেন যে বরুণ নন্দী তাঁকে ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। চেকের নীচে ওই নামে সইও রয়েছে।
বুধবারই ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী এবং দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে রাজ্যে বিরোধী দল বিজেপি। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বুধবার দাবি করেছেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তা সত্ত্বেও একটি পুরনো ভিডিও নিয়ে অনর্থক জল ঘোলা করা হচ্ছে। ঠিক এই সময়েই আরও এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে চাকরি-সংক্রান্ত অভিযোগ উঠল।
বিজেপির দাবি:
বিজেপি (BJP) নেতা গৌতম সাহা মণ্ডল বলেন, 'শুধু বরুণ নন্দী নন। সর্বাণী দাসও আছেন। তাঁকেও ইডি-সিবিআই ডাকুক।'
আরও পড়ুন: 'যে পার্থকে আমরা চিনতাম, এর সঙ্গে তাঁর মিল খুঁজে পাচ্ছি না' মন্তব্য ফিরহাদের