ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, উত্তর ২৪ পরগনা: নিজের স্কুলে মানসিক নির্যাতন, হেনস্থার শিকার শিক্ষিকা। দুপুরে ফেসবুক লাইভে অভিযোগের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সন্ধেয় বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ডানলপের খালসা মডেল স্কুলের কিন্ডারগার্টেন বিভাগের সহকারী শিক্ষিকা জশবীর কৌরের ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনায় স্কুলের প্রিন্সিপাল ও স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে দক্ষিণেশ্বর থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত শিক্ষিকার ভাই।


জশবীরের স্বামী মারা গেছেন, দুই ছেলে বিদেশে থাকেন। গতকাল ফেসবুক লাইভে শিক্ষিকা দাবি করেন, গত ২২ বছর ধরে তিনি খালসা মডেল স্কুলে চাকরি করেন। অভিযোগ, তাঁর প্রাপ্য টাকা আটকে রেখে তাঁকে হেনস্থা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। চাওয়া হচ্ছে ২৫ বছরের পুরনো নথি। ফেসবুক লাইভে শিক্ষিকা দাবি করেন, ‘মুঝে ইনসাফ চাহিয়ে’। এরপরই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় শিক্ষিকার দেহ। স্কুলের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। 


জশবীর কৌরের ভাই জানিয়েছেন, আমি এটাই বলতে চাই যে, এত টর্চার উনি করতেন, সেটা দিদি সহ্য করতে পারল না। ওরা দিদির প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে।  যারা পুরনো টিচার, ২০-২৫ বছর হয়ে গিয়েছে যাদের, তাঁদের ধমকি দেওয়া হয়েছে, স্কুল থেকে বার করে দেব।  যাতে গ্র্যাচুয়িটির টাকা যাতে না দিতে হয়। কতটা মেন্টালি টর্চার হয়েছে যে ওনাকে, সুসাইড করতে হল' !


সাংবাদিক: আপনি গতকাল রাতে দক্ষিণেশ্বর পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ জানিয়েছেন। আপনার অভিযোগের বিষয়টা কী ?


মৃতার ভাই: আমি চাইছি যে ওদের শাস্তি হোক। যারা আছে ম্যানেজমেন্টের লোক, নিরক্ষর, কোনও শিক্ষিত লোক নেই এখানে। অত্যাচার করে যাচ্ছে টিচারদের উপরে।


আরও পড়ুন, বাংলাদেশে ইউনূস সরকারের বিদ্বেষের বিষ, ছাড় নেই হিন্দু মহিলাদেরও, এবার বাড়িতে ঢুকে 'খুন' !


প্রসঙ্গত, অতীতেও আত্মঘাতী হয়েছেন একাধিক শিক্ষিকা। তবে প্রত্যেকটাই পৃথক ইস্যু ছিল। কখনও কোভিডের সময় রোজগার বন্ধ। কখনও সহকর্মীদের খারাপ আচরণ। কখনও আবার সাংসারিক চাপের শিকার হয়ে  আত্মহত্যার একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে।  বছরটা ছিল ২০২২। সেবার হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ দেখতে হয়েছিল পরিবারকে। অবসরের পর কেটে গিয়েছিল ৩টে বছর। তারপরেও মিলছিল না পেনশন। বহুবর বিকাশভবনে গিয়েছিও হয়নি সমাধান। তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, অভিযোগ তুলেছিল পরিবার। এরপরেই ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। যদিও এবার পুরোপুরি ভিন্ন প্রেক্ষাপট ডানলপে। প্রকৃত কী কারণে চরম সিদ্ধান্ত নিলেন ওই শিক্ষিকা, তা জানার অপেক্ষায় পরিবার।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।