সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: কালবৈশাখীর (Kalbaisakhi) জেরে ভাঙল বাড়ি গাইঘাটায়। গতকালের ঝড়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি মুখে গাইঘাটা ব্লক। ঝাউডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচুর ঘরবাড়ি ভেঙেছে, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের (Crops)।


বৃহস্পতিবার বিকেলে কালবৈশাখী ঝড়- শিলা বৃষ্টির ফলে ঝাউডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আংরাইল খেদাপাড়া, বর্ণেবেড়িয়া, আংরাইল, কাউনকে ঝাউডাঙ্গা-সহ বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের দাপটে ভেঙেছে ঘরবাড়ি। শিলাবৃষ্টির ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের।পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ছবি তুলে তাদের পাশে থাকবার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।


প্রসঙ্গত, গতকালের বৃষ্টিতে খানিক স্বস্তি মিললেও, জারি রইল অস্বস্তি। বিভিন্ন জেলায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েক জনের। পূর্ব বর্ধমানের ভাতার, কালনা, খণ্ডঘোষ ও মঙ্গলকোটে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। আহত হয়েছেন একজন। সবমিলিয়ে বাজ পড়ে রাজ্যে ছ'জেলায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।


মুর্শিদাবাদের সালারে দুপুরে একটি খামারে কাজ করছিলেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। সেই সময় বাজ পড়লে ২ জনের মৃত্যু হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরেও ঘটেছে বাজ পড়ে মৃত্যুর ঘটনা। শালবনী থানার বাগমারিতে একজন এবং চন্দ্রকোণা থানার যাদবনগর গ্রামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।


উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় বাজ পড়ে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ঝোড়ো হাওয়ায় ঝাড়গ্রামের গড়মোহানিসহ বিভিন্ন জায়গায় উড়ে যায় একাধিক বাড়ির ছাউনি। বেশ কয়েকটি বাড়ির পাঁচিল ভেঙে পড়ে। ক্ষতি হয় ফসলের। জমি থেকে বাড়ি ফেরার সময় বাজ পড়ে মৃত্যু হয় এক মহিলার। 


হাওড়ার আমতা ও বাগনানে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। আহতরা আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার বিকেলে আমতার শেরপুরে জমিতে ধান কাটছিলেন মহানন্দ ঘুকু। সেই সময়ে বাজ পড়লে তিনি জখম হন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকেমৃত বলে ঘোষণা করেন।


অন্যদিকে আমতার এক বাসিন্দা বাড়ির খোলা জায়হায় বসেছিলেন। সেই সময়ে জমিতে বাজ পড়লে ইসমাইলসহ তিনজন আহত হযন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক ইসমাইলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাগনানে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। 


 আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ৪/৫ দিন বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। শনি ও রবিবার থেকে বাড়বে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গে ওপরের দিকের পাঁচ জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মালদা ও দুই দিনাজপুরে। 


আরও পড়ুন, 'কেউ দোষ করলে, শাস্তি হবে', 'সুপ্রিম' নির্দেশে প্রতিক্রিয়া কুণালের


তবে এই বৃষ্টি দীর্ঘমেয়াদি নয়। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শনিবারও তাপমাত্রাও বাড়বে। তিন দিনে তিন-চার ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। যেখানে বৃষ্টি বেশি হবে সেখানে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় বাড়বে অস্বস্তি।