সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বড় বিপদ এড়াল হালিশহর, পুলিশি অভিযানে প্রায় সাড়ে ৩ কুইন্টাল নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার ! গতকাল সন্ধ্যায় হালিশহর থানার পুলিশ এসিপি বিজপুরের নেতৃত্বে হালিশহরের ৩ নং ওয়ার্ডের সরকার পাড়ার দেবু খানের বাড়িতে অবৈধভাবে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে মজুত করা একটি ঘরে আচমকা অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে তিন কুইন্টাল নিষিদ্ধ শব্দ বাজি বাজেয়াপ্ত করে। কোথা থেকে কীভাবে এত শব্দ বাজি মজুত হল, একজন ব্যক্তিকে আটক করে তা জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রাতে আরও কিছু স্থানে অভিযান চালানো হবে। নির্দিষ্ট ধারায় মামলাও দায়ের করা হবে।
সম্প্রতি কল্যাণীর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। কল্যাণীর রথতলায়, বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ঝলসে একাধিক জনের মৃত্যু হয়। প্রশ্ন উঠছে, এরকম জায়গায় কারখানা তৈরি হল কী করে? এতদিন চললই বা কী করে? কোথায় ছিল প্রশাসনের নজরদারি? পুড়ে ছাই সবকিছু। চারদিকে ধোঁয়া। তার মধ্যে থেকেই বের করা হয়, একের পর এক ঝলসানো মৃতদেহ। মৃত কর্মীর মেয়ে বলেন, বাজিতে কাজ করত। মালটা বাঁধত আমি শুনলাম, আগুন ধরেছে। দৌড়ে আসলাম মাকে দেখার জন্য। শুক্রবার দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ, বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে কেঁপে ওঠে, কল্যাণীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের রথতলা।
একেবারে জনবহুল এলাকায় এই বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। তীব্রতা যে কতটা ছিল, তা এই ছবি দেখলেই স্পষ্ট। কোনওকিছু আর আস্ত নেই। প্রশাসন সূত্রে দাবি, মৃতদের ৪জনই মহিলা। যদিও, প্রত্য়ক্ষদর্শীদের উল্টো দাবি। প্রত্য়ক্ষদর্শী বিশ্বরূপ ঘোষ বলেন, আমার নিজে চোখে দেখা, আমরা দেখেছি ৬ জনের মৃত্য়ু হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন চেষ্টা করছে চাপানোর। কল্যাণী পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত রথতলা থেকে, রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপারের অফিসের দূরত্ব মেরেকেটে এক কিলোমিটার। আর এখানেই রমরমিয়ে চলছিল বেআইনি বাজির কারবার।
আরও পড়ুন, 'কুপ্রস্তাবে' অরাজি, ICDS কর্মীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ ! কতটা জোরে চিৎকারে পার হওয়া যাবে এ যন্ত্রণা ?
তৃণমূল পরিচালিত কল্যাণী পুরসভার চেয়ারম্যান বলেছিলেন, শুধু বাজি বিক্রির অনুমতি ছিল। অথচ মৃতের পরিবারই স্পষ্ট জানাচ্ছে, শব্দবাজি বানানো হত। কল্যাণী পুরসভা তৃণমূল নেতা ও চেয়ারম্যান নীলিমেশ রায়চৌধুরী বলেন, ট্রেডিং সেন্টার। আপনি কিনে এনে দোকানে বিক্রি করেন যেমন। এটা তাই। গোডাউন, বাড়ির মধ্যে মজুত করে বিক্রি করত। কল্যাণীর রথতলায় যেখানে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেটা এতটাই ঘিঞ্জি এলাকা যে দমকলের গাড়িই ঢুকতে পারেনি। বাজি বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে যান কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চাকদার বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষও।