সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগণা : বাগদা গণধর্ষণ কাণ্ডে বিএসএফ-যোগ নিয়ে উত্তাল রাজ্য। এরই মাঝে সামনে এল এক ভয়ঙ্কর তথ্য। অভিযোগ, নিগৃহীতাকে ধর্ষণ করা হয় তাঁর ছোট্ট মেয়ের সামনেই। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দুই বিএসএফ জওয়ানকে। রাহুল সিনহা এদিন বললেন, যদি তাঁরা সত্যিই দোষী হয়ে থাকে, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হওয়া দরকার। কে কেন্দ্রের , কে রাজ্য়ের, একজন মহিলার সম্মানহানির ক্ষেত্রে দেখা উচিত নয়, বা দেখা হবেও না। কিন্তু বিষয়টার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার। এর পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র আছে কিনা, সেটাও দেখা দরকার। কারণ রাজনৈতিক আবর্ত যেরকম চলছে ! বলে জানান এদিন রাহুল সিনহা।


 অভিযোগকারিণী বসিরহাটের বাসিন্দা। তাঁর দাবি, আত্মীয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সপরিবারে বাগদা সীমান্তের জিতপুর দিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।  সেই সময়ই দুই জওয়ানের খপ্পরে পড়েন তাঁরা। সঙ্গে ছিল ৫ বছরের ছোট্ট মেয়ে। অভিযোগ, সেইসময় কর্তব্যরত দুই বিএসএফ জওয়ান শিশুকন্যা সমেত তাঁকে পটল ক্ষেতে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে মেয়ের সামনেই  জওয়ানরা তাঁকে গণধর্ষণ করে। এরপর বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তার ভিত্তিতে দুই জওয়ানকে গ্রেফতার করে বাগদা থানার পুলিশ। ‘দালাল ধরে ওই গৃহবধূ সীমান্ত পেরোচ্ছিলেন, তখন ঘটনা ঘটে, ২ জওয়ানকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ওই জওয়ানদের তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশের হাতে' , বক্তব্য বিএসএফের । সীমান্তে যাচ্ছেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিত্‍ দাস । ‘সীমান্তে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেব, জানালেন বিধায়ক । 'সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের নজরদারির পরিসর বাড়ানো হলে আরও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে।'  দাবি বাগদার বিধায়কের। 


আরও পড়ুন, 'তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনরোষ প্রবল, মন্ত্রীকে জুতো ছুঁড়ছে মহিলা', সৌগত ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া শমীকের


 জানা গিয়েছে, ঘটনার কথা  ছড়িয়ে পড়তেই দ্রুত ব্যবস্থা নেয় বিএসএফ। বিএসএফের সদর দফতর থেকে এনিয়ে পুলিশের কাছেও রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। নিগৃহীতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য় পাঠানো হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে  উত্তেজনা না ছড়ায়, সে দিকে নজর রেখেছে প্রশাসন। ধৃতরা হল ৬৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের BSF-এর ASI এস পি চেরো এবং কনস্টেবল আলতাফ হোসেন। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে জিগ্যেস করা হলে তিনি বলেন, কাশ্মীরে সেনার বিরুদ্ধে এমন ভুয়ো অভিযোগ ওঠে। তবে যদি সত্যি হয়ে থাকে, ভয়ঙ্কর ঘটনা।  সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারীদের ওপর অত্যাচার করাই বিএসএফের কাজ। মন্তব্য রাজ্য তৃণমূলের সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের।