সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা:  টিপ সই নিয়ে স্লিপ দিয়ে, রেশনের সামগ্রি নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ ডিলারের বিরুদ্ধে। দত্তপুকুরের ময়না গোদিতে দীর্ঘদিন যাবৎ সুমন ভদ্র নামক রেশন ডিলার রেশন উপভোক্তাদের আঙুলের টিপসই নিয়ে কাগজ দিয়েও রেশনের সামগ্রী দিতে অস্বীকার করেন। বিগত তিন মাস যাবৎ এরকম চলতে থাকায় প্রায় ২৫ হাজার ক্ষুব্ধ রেশন উপভোক্তারা মঙ্গলবার রেশন দোকানের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তাঁদের অভিযোগ দীর্ঘদিন যাবৎ টিপ সই নেবার পরও কেন তাঁদের উপযুক্ত রেশনের সামগ্রি তারা পাচ্ছে না? এ  নিয়েই রীতিমত বিক্ষোভ দেখানো শুরু হলে দোকান ছেড়ে পালায় রেশন ডিলার সুমন ভদ্র। এরপরই খুব তো রেসন উপভোক্তাদের  সামাল দিতে এসে উপস্থিত হয় দত্তপুকুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।


তারপর পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকেই কিছু সংখ্যক উপভোক্তাদের হাতে রেশন সামগ্রী তুলে দেয়। পাশেই পশ্চিম খিলকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত  থাকায় গোটা ঘটনার খবর পেতেই ঘটনাস্থলে তৎক্ষণাৎ এসে পৌঁছন বারাসাত ব্লক ১ এর সভাপতি হালিমা বিবি সহ তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক কর্মীরা। তিনি জানান, 'দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন এই রেশন ডিলার। তার ফলেই রেশন সামগ্রী দিতে হয়তো কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। তবে উপভোক্তাদের অভিযোগ আসার পরেই, তারা সেই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে খাদ্য দফতর পর্যন্ত অভিযোগ করেন। এবং সেই রেশন ডিলারকে বারংবার জানায় উপযুক্ত রেশন সামগ্রিক উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তারপরও সামগ্রী দিতে কিছু গাফিলতি হওয়ায়, আজ এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়েছেন রেশন ডিলার সুমন ভদ্র।


রেশন দুর্নীতি মামলায় এখনও জেলবন্দি প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এবার ভুয়ো রেশন কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী আত্মসাৎ করার অভিযোগে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির রেশন ডিলারশিপ সাসপেন্ড করল খাদ্য দফতর। একইসঙ্গে তাঁকে প্রায় আট কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। যদিও নিজেকে নির্দোষ দাবি করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই রেশন ডিলার।  বাংলা আবাস যোজনার সমীক্ষায় অস্বচ্ছতার অভিযোগে যখন জেলায় জেলায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তখন মালদার কালিয়াচকে বড়সড় রেশন কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠল! দুর্নীতির অভিযোগে এক তৃণমূল নেতার রেশন ডিলারশিপ সাসপেন্ড করল জেলা খাদ্য দফতর।  জরিমানা করা হল প্রায় ৮ কোটি টাকা!


আরও পড়ুন, অনুব্রত ফিরতেই ভিডিও পোস্ট TMCP-র জেলা সভাপতির, 'কী ভেবেছিলে সারা জীবন জেলেই থাকবেন ?'


 যাঁর রেশন ডিলারশিপ সাসপেন্ড করা হয়েছে, তিনি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি পদে রয়েছেন। অর্থাৎ যিনিই রেশন ডিলার, তিনিই শাসকদলের নেতা আর সেই তিনিই কিনা কোটি কোটি টাকার রেশন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠল। ইনি হচ্ছেন আশরাফুল ইসলাম। কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের সাহবানচকের রেশন ডিলার। তৃণমূলের দাপুটে নেতা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০১৫ সাল থেকে ২০২২, এই ৭ বছরে শয়ে শয়ে ভুয়ো রেশন কার্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার রেশন সামগ্রী লুঠ করেছেন এই তৃণমূল নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে প্রথমে অভিযোগ ওঠে ২০২২ সালে। কিন্তু কোনও অজানা কারণে মাঝপথে তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। ফের ২০২৪ সালে এই আশরাফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। একযোগে রাজ্য ও জেলা খাদ্য দফতর, মালদা জেলাশাসকের দফতরে দায়ের হয় অভিযোগ। তারপরেই তৃণমূলের এই প্রভাবশালী নেতা ও রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে প্রশাসন। 



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।