সমীরণ পাল, বনগাঁ: পুরভোটে দলের কেউ গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁর চামড়া গুটিয়ে নেবেন তিনি। এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের বনগাঁ সংসদীয় জেলার সভানেত্রী আলোরানি সরকার। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চাপ সামলাতে না পেরে এমন মন্তব্য, কটাক্ষ করেছে বিজেপি।


‘দলের অনুশাসন আছে। অনুশাসন যারা মানবে না, দলে যদি কোনও রকম গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার চিন্তা করে, চামড়া আমি গুটিয়ে নেব তাদের।’ 


ঠিক এই ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ সংসদীয় জেলার সভানেত্রী আলোরানি সরকার। গাইঘাটার ডুমায় যোগদান কর্মসূচি অনুষ্ঠানে দলের একাংশের প্রতি হঁশিয়ারি দিতে দেখা গেল তাঁকে। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের উদ্দেশে নেত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘দলের অনুশাসন আছে। অনুশাসন যারা মানবে না, দলে যদি কোনওরকম গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার চিন্তা করে, চামড়া আমি গুটিয়ে নেব তাদের। দল ঠিকঠাক মতো সিদ্ধান্ত নেবে। গোঁজ প্রার্থী আমরা একদম দিতে দেব না। দল একটা যদি যে কোনও মানুষকেই ভাল মুখ দেখে দেবে, প্রার্থী করবে। আমরা তাকেই মান্যতা দিয়ে, আমরা তাকে জিতিয়ে নেব।’


রাজ্য সরকারের প্রস্তাব মেনে ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা ও হাওড়া পুরসভায় ভোটের সম্মতি দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বাকি শতাধিক পুরসভায় বকেয়া ভোট কবে হবে, তা নিয়ে এখনও কিছু স্থির না হলেও, পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে দিয়েছে সব দল।


বনগাঁ সংসদীয় জেলার আওতায় থাকা গোবরডাঙা ও বনগাঁ পুরসভার মেয়াদ আগেই ফুরিয়েছে। বনগাঁ পুরসভায় প্রশাসক পদে ছিলেন শঙ্কর আঢ্য। বিধানসভা ভোটের পর তাঁকে প্রশাসক পদ থেকে সরিয়ে, গোপাল শেঠকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।


স্থানীয় তৃণমূল সূত্রে খবর, তারপর থেকে এলাকায় শাসকদলের অন্দরে দু’টি স্রোত কাজ করছে। শঙ্কর আঢ্যর অনুগামীরা পুরভোটে টিকিট না পেলে নির্দলে দাঁড়াতে পারেন, এমন জল্পনা চাউর হয়েছে জেলা তৃণমূলে।


বিজেপি-র বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডলের দাবি, ‘বিধানসভায় পর্যুদস্ত হয়েছে তৃণমূল। পুরসভাও আমরা পাব। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার শাসকদল। চাপ সামলাতে না পেরেই নেত্রীর এমন মন্তব্য।’

বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে রয়েছে। আর বনগাঁ সংসদীয় জেলার আওতায় থাকা ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিই গেরুয়া শিবিরের দখলে। এই রাজনৈতিক সমীকরণের মাঝে দাঁড়িয়ে শাসক শিবির যে বনগাঁ পুরসভা পুনর্দখলে মরিয়া তা সংসদীয় জেলা সভানেত্রীর হুঁশিয়ারিতেই স্পষ্ট।