সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: ফের আবাস যোজনায় (awas yojana) স্বজনপোষণের (irregularity) অভিযোগ, আঙুল উঠল গ্রাম পঞ্চায়েতের (panchayat) প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির পূ্র্তে কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। একই পরিবারের দাদা কর্মাধ্যক্ষ ও ভাই পঞ্চায়েত প্রধান, জানাচ্ছেন স্থানীয়রা (residents)। অভিযোগ পদের জোর খাটিয়েই পরিবারের পাঁচ সদস্যের নামে আবাস যোজনার ঘর নিয়েছেন তৃণমূলের ওই দুই নেতা। বিষয়টি নিয়ে এর মধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে হাবরায় (habra)।


কী অভিযোগ?
স্থানীয়েদর অভিযোগ, হাবরা এক নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ নেহাল আলির স্ত্রীর নামে গীতাঞ্জলির ঘর নিয়েছেন। নেহালের ভাই পৃথিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কামাল হোসেনও ঘর নিয়েছেন স্ত্রীর নামে। পাশাপাশি তৃণমূলের দুই নেতার বিরুদ্ধে তাঁদের বাবা-সহ দুই ভাই ও ভাইপোর নামেও ঘর নেওয়ার অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। তাঁদের বক্তব্য, এক দিকে ঝাঁ চকচকে মার্বেল বসানো পাকা বাড়ি রয়েছে ওই দুজনের। তা হলে কেন গ্রামের অসহায় মানুষদের জন্য আবাস যোজনার দাবিদার ব্যক্তিদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হল? স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কার মণ্ডলের বক্তব্য, তিনি তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কিন্তু নিচের তলার নেতাদের এই ধরনের দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের  রাজনীতি করা ছেড়ে দিয়েছেন। অভিযোগ সামনে আসতেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বারাসাত সংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি তাপস মিত্রের কথায়, 'হাবরা এক নম্বর ব্লকের বিডিওর কাছে তৃণমূলের নেতা নেহাল আলি বিরুদ্ধে স্বজন পোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগে আমরা ডেপুটেশন জমা দিয়েছি। আর এইভাবে দুর্নীতি চলতে থাকলে আগামী দিনে হাবরা এক নম্বর বিডিও অফিসের কার্যকলাপ থমকে দেবে বিজেপি। তৃণমূলের নেতা নেহাল আলির পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আইন অমান্য আন্দোলন করবে বিজেপি।'


কী দাবি অভিযুক্তদের?
সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের নেতা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ও তাঁর ভাই। নেহাল জানান, তাঁর পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য সরকারি আবাস যোজনায় ঘর পেয়েছেন। তাঁরা সেই ঘরের যোগ্য দাবিদারও ছিলেন। কেননা তাঁর পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল।তাঁর আরও যুক্তি,  ২০১৮  সালে যখন তিনি ঘর পান সে সময় কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন না। বিপিএল তালিকায় পরিবারের সদস্যদের নাম থাকায় ঘর পেয়েছেন। দলের একাংশ তাঁকে কালিমালিপ্ত করার জন্য বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই ধরনের দুর্নাম করে বেড়াচ্ছে, অভিযোগ নেহালের। পৃথিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কামাল হোসেনও দাদার সুরে কথা বলেছেন। তাঁর দাবি, প্রধান হয়েছেন পাঁচ বছর আগে। তার আগে ঘর পেয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা।বিরোধীরা চক্রান্ত করে এই দুর্নাম রটাচ্ছে। এই অভিযোগ নিয়ে হাবরা এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহাও জানান, নেহাল আলির পরিবারের সদস্যরা ঘর পেয়েছেন কারণ তাঁরা সেই ঘরের দাবিদার ছিলেন। ভারতীয় জনতা পার্টি যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বস্তুত, গত কয়েক সপ্তাহে এই ধরনের একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। সব মিলিয়ে তাই অস্বস্তির মেজাজ  হাবরা এক নম্বর ব্লকে।


আরও পড়ুন:বেলচা দিয়ে বেধড়ক মারধর, ছাত্রকে বারান্দা থেকে ছুড়ে খুনের অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে