সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছিল, যে রোগীদের থেকে টাকা চাওয়া হচ্ছে। দালালরাজের অভিযোগ তুলেছেন খোদ কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। তবে এবার হাসাতাল চত্বরে দালালরাজ রুখতে এবার পড়েছে পোস্টার।


পোস্টারে স্পষ্ট লেখা হয়েছে যে, 'সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের আগত রোগীর ও রোগীর আত্মীয় পরিজনদের জানানো যাচ্ছে যে, হাসপাতালের যেকোনও পরিষেবা পাওয়ার জন্য, কোনও ব্যাক্তিকে কোনও টাকা দেবেন না।' এমন কিছু ঘটলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলা হয়েছে।  
পাশাপাশি 'দালালরাজ নিয়ে কেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি? এরপরে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঢুকতে পারবেন তো?', সাগর দত্ত মেডিক্যালের প্রিন্সিপালকে হাসপাতালে না পেয়ে ফোনে হুমকি মদনের।


সম্প্রতি মদন মিত্র বলেন, 'হাসপাতালে দালালদের প্রতিদিনের আয় ৫০ হাজার টাকা। কলকাতা পুলিশ এসএসকেএম, এনআরএসে ধরেছে, তার মানে এতদিন ছিল! কামারহাটিতে দালালরাজের বিরুদ্ধে যারা মিছিল করেছিল, তাদের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। বউ-বাচ্চাকে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। কলকাতায় গ্রেফতার হল, আর কামারহাটিতে ধরতে পারছে না? পুলিশ ধরতে পারে না, এটা হয়?' মন্তব্য কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রর। 


রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজ - সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে দালাল-জাল। এই অভিযোগও অবশ্য নতুন নয়। সম্প্রতি, কামারহাটিতে, সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজে এক রোগীর মৃত্যুর নেপথ্যে দালালরাজের অভিযোগে সরব হন খোদ এলাকার তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। চক্রের কারবারিদের রীতিমতো হুঙ্কার দেন তিনি। শনিবার সাগর দত্তে দালাল-চক্রের অভিযোগ তুলে ২ জনের নাম নেন মদন মিত্র।


অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল চত্বরে পোস্টারও পড়ে। কামারহাটির ২ নম্বর ওয়ার্ডের তুঁতবাগানের এক তৃণমূল কর্মীর পরিবারের অভিযোগ, দালাল চক্রের বিরুদ্ধে পোস্টার দেওয়ায় তাঁদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। NRS এবং SSKM - কলকাতার এই দুই মেডিক্যাল কলেজ থেকে দালালচক্রে জড়িত অভিযোগে মোট ৬-জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু, কামারহাটির ঘটনায় কেউ ধরা না পড়ায়, নিজের সরকারের পুলিশ-কেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মদন মিত্র।       


আরও পড়ুন, কার মাধ্যমে বরাত ? OMR শিট মূল্যায়নকারী সংস্থার বিভিন্ন ঠিকানায় তল্লাশি CBI-র


গতকাল এই ইস্যুতে মদন মিত্রর পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেতা তথা ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ (Arjun Singh)।  কার্যত মদনের সুরে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেন তিনিয আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নিশানা করেন পুলিশ-প্রশাসনকে। অর্জুন সিংহ বলেছিলেন,  'অপরাধ বাড়লে জনপ্রতিনিধিদের ওপর প্রভাব পড়ে। মদনদা জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। যার অপরাধ দমন করার কথা, সে যদি না করে, তাহলে কে করবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা পুলিশের কাজ, তাদের রক্ষা করতে হবে।'