সমীরণ পাল, বনগাঁ: বদলি(transfer) হয়ে গিয়েছেন প্রিয় শিক্ষক। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা (students) তাঁকে কিছুতেই যেতে দেবে না। আটকানোর উপায়? পথ না দেখে শেষমেশ বিক্ষোভের(agitation) রাস্তায় হাঁটল পড়ুয়ারা। বনগাঁর(bangaon) ধর্মপুকুরিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।
কেন বিক্ষোভ?
তন্ময় বসু দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ধর্মপুকুরিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। সঙ্গে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বও সামলাচ্ছেন তিনি। হালেই অন্যত্র বদলির আবেদন জানিয়েছিলেন তন্ময়। বাড়ির কাছে কোনও স্কুলে যাতে তাঁকে বদলি করা হয়, সেই মতো আর্জি জানিয়েছিলেন। আবেদন মঞ্জুরও হয়ে যায়। কিন্তু বদলির সিদ্ধান্ত মানতে রাজি ছিল না পড়ুয়ারা। বাদ সাধেন তাদের অভিভাবকরাও।
তন্ময়বাবু যাতে বদলির সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেন, সে জন্য প্রথমে অভিভাবক ও পড়ুয়ারা স্কুলে এসেই তাঁর কাছে অনেক অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে সম্ভবত কাজ হয়নি। তার পর মঙ্গলবার দুপুরে এসআই অফিসে ডেপুটেশন দেন তাঁর। শুরু হয় বিক্ষোভ। দাবি একটাই। যত ক্ষণ পর্যন্ত বদলি আটকানো না হচ্ছে তত ক্ষণ পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে, জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
নতুন নয়...
মাসতিনেক আগে কার্যত একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল সন্দেশখালির কানমারি বিদ্যামন্দিরে। শিক্ষক তুষারকান্তি রায়ের বদলির নির্দেশের বিরোধিতা করে গত এপ্রিলে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছিল, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি রায় পড়ুয়ারদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। মূলত তাঁরই উদ্যোগে স্কুলের পড়াশোনা-সহ নানা পরিকাঠামোয় চোখে পড়ার মতো উন্নয়ন হয়েছে। দুঃস্থ পড়ুয়াদেরও পাশে থেকেছেন তিনি। গত এপ্রিলে তাঁকে বসিরহাটের একটি স্কুলে বদলি করা হলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিভাবক ও পড়ুয়ারা।
তবে কিছু বিক্ষোভের বোধহয় ইতিবাচক দিকও থাকে, বলছে শিক্ষামহল।
গত কয়েক মাসে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যার পর শিক্ষক-পড়ুয়া সম্পর্কের 'অবনমন' চিন্তা বাড়িয়েছিল অনেকের। কিন্তু সন্দেশখালি বা বনগাঁর স্কুলগুলোর ছবি বুঝিয়ে দেয়, সমীকরণটা সর্বত্র তিক্ত নয়। প্রিয় শিক্ষককে আটকে রাখতেও পথে নামতে পারে পড়ুয়ারা। আশার আলো হিসেবে এটুকুই বা কম কী?
আরও পড়ুন:কাজের আয়ু ৪ বছর, তারপর ' কেলা খাও', কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে আক্রমণাত্মক মমতা