সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: রাতের অন্ধকারে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির (TMC Area President Attacked In Haroa) বুকে-পেটে লাথি, এলোপাথাড়ি কিল-চড়, বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানায়। আপাতত তিনি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন। হাড়োয়া থানার শালিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শালিপুর বাজারে ঘটনাটি ঘটেছে।
কী জানা গেল?
জখম তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির নাম তরিকুল ইসলাম। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার আগে তরিকুল কয়েকজন তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের নিয়ে একটি দোকানে চা খাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ই কয়েকজন দুষ্কৃতী গিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে দোকান থেকে বের করে আনে। বুকে-পেটে লাথির পর এলোপাথারি মারতে শুরু করে তাঁকে। এর পর বাজারের লোক চিৎকার শুনে ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে তৃণমূল নেতাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে হাড়োয়া ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তাঁর। বুকে পেটে গুরুতর চোট পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরিকুল। তৃণমূল অঞ্চল সভাপতিকে এই ভাবে আক্রমণের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটাল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে হাড়োয়া থানার পুলিশ। স্থানীয়দের একাংশের প্রশ্ন, এটি কি এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের? উত্তেজনা দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। হাড়োয়ার থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ওই ঘটনায়। গোটা এলাকা থমথমে। অলিতে গলিতে টহল দিতে শুরু করেছে পুলিশ। গত নভেম্বরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে, কাকভোরে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় বাড়ির কাছেই গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্করকে। তার পরের পর্ব ঘিরে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।
প্রেক্ষাপট...
সইফুদ্দিন লস্কর তৃণমূলের বামনগাছি অঞ্চলের সভাপতি ছিলেন। তাঁর স্ত্রী, বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১৩ নভেম্বর ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ নমাজ পাঠের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্কর। অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ৪-৫ জন দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। তাড়া করে এক দুষ্কৃতীকে ধরে বেধড়ক মারতে শুরু করে উত্তেজিত জনতা, এমনই অভিযোগ। তাতে এক হামলাকারীর মৃত্যু হয়েছিল বলেও দাবি। এরই মধ্যে অপর এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তাতে জনতার রোষ প্রশমিত হয়নি। বেলা বাড়তেই আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে জয়নগর। তৃণমূল নেতাকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরপর বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। ফিরিয়ে দেওয়া হয় দমকলের গাড়ি।
আরও পড়ুন:পানীয় জলের পাইপ থেকে বেরিয়ে এল কেঁচো ও পোকামাকড় ! কাঠগড়ায় প্রশাসন