সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: এবার অন্য দল থেকে তৃণমূলে (TMC) আসা নেতা-কর্মীদের ওপর দুর্নীতির দায় চাপালেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় (TMC MLA Tapas Roy)। বলেন, 'যাঁরা সবসময় সরকারি দলের সঙ্গে থাকতে চান, তাঁরাই দলে ঢুকে তাঁদের কাজ করেছেন। এই জায়গাটা আটকাতে পারলে আজ এই পরিস্থিতি হত না।' 


আক্রমণ শুভেন্দুকে...
খড়দার সভা এদিন আক্রমণের চড়া সুর শোনা যায় তৃণমূল বিধায়কের কথায়। বলেন, 'কদিন আগে বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব এনেছিলাম। দিদি, বিধানসভার নেত্রী হওয়ায় বললেন ওঁকে ক্ষমা করে দাও। কিন্তু ওই স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব যদি ঠিকঠাক আনা যেত, তা হলে রাহুল গাঁধীর মতো ওঁরও বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যেত। দিলেন না।' পাল্টা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতাও। বলেন, 'ক্ষমতা থাকলে ওঁকে করে দেখাতে বলুন। আমাকে সাসপেন্ড করেছিলেন। সাসপেনশন প্রত্যাহার করতে হয়েছিল।'


আগেও বিস্ফোরক তাপস...
এর আগেও বিতর্ক বাঁধিয়েছিলেন তাপস রায়। সে বার নিশানায় ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে ফের অস্বস্তি বাধে। তৃণমূল ছেড়ে উত্তর কলকাতায় বিজেপির সভাপতি হলেন তমোঘ্ন ঘোষ। এই নিয়েই শুরু হয়েছে জলঘোলা। এই ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তৃণমূল নেতার কথায়, "তমোঘ্নকে তৃণমূলের ছাত্রপরিষদের সভাপতি করতে মমতার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তমোঘ্ন ও তাঁর বাবা তপন ঘোষ দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। তমোঘ্নর বাড়ির দুর্গাপুজোয় গিয়েছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গা পুজোয় সেদিন হাজির ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, কল্যাণ চৌবেও।'  তাপস রায় এও বলেন, "আমি সোজাসাপ্টা রাজনীতি করি। এত প্যাঁচপয়জার পলিটিক্স বুঝি না। তবে দলের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ওঁরা ৬ বছর দলে ছিলেন না, তখন উত্তর কলকাতা আমরা সামলেছি। দিদিমণির মহানুভবতার সুযোগ নিয়ে দলের বহু ক্ষতি করা হয়েছে। একাধিক দলের সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ রাখছেন। দলের উচিত তাঁদের চিহ্নিত করা, এরা দলের বোঝা।’ প্রসঙ্গত, উত্তর কলকাতার দায়িত্ব থেকে তাপসকে সরিয়ে সুদীপকে দায়িত্ব দেওয়ার পরই পদ খুইয়ে বিস্ফোরক হয়েছিলেন বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। এদিকে, এ প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। তিনি বলেন, "তমোঘ্ন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেঠু বলে ডাকেন। হয়ত সুদীপই তমোঘ্নকে বিজেপিতে পাঠিয়েছেন। আবার সুদীপই ঠিক সময় তৃণমূলে ফিরিয়ে আনবেন’। অন্যদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'অনেকেই বিভিন্ন দল থেকে বিজেপিতে এসেছেন। সবাইকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারীও তৃণমূল থেকে এসে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হয়েছেন। তথাগত ও সৌগত রায় দুই ভাই দুই রাজনৈতিক দলে আছেন। আশা করব দলের সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণিত হবে। দলে সন্দেহ তৈরি হলে ভবিষ্যতে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে’।


আরও পড়ুন:১০০ দিনের কাজে পাবেন আরও বেশি টাকা, কোন রাজ্য মজুরি দিচ্ছে বেশি ?