সমীরণ পাল, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও রঞ্জিত হালদার, সন্দেশখালি: বাঘের ডেরায় মন্ত্রী! সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের নেতৃত্বে, সন্দেশখালির কালীনগরে গেল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। যদি সন্দেশখালি থেকে 62 কিলোমিটার দূরে, কলকাতায় বিজেপি বিধায়কদের আটকে দেওয়া হয়, তাহলে শাসক দলের প্রতিনিধিরা কীভাবে ন্য়াজাট থানা এলাকায় ঢোকার অনুমতি দিল পুলিশ-প্রশাসন? প্রশ্ন উঠছে।


কী ঘটল?
তিনি পারলেন। তিনি শাসক দলের বিধায়ক, তার ওপর মন্ত্রী। তাই কি তিনি পারলেন? সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের নেতৃত্বে, সন্দেশখালির ১৪৪ ধারা জারি না থাকা এলাকায় গেল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। কিন্তু বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, ১৪৪ ধারা দেখিয়ে সোমবার যখন সন্দেশখালি থেকে ৬২ কিলোমিটার আগে, বাসন্তী হাইওয়েতে ওঠার মুখে সায়েন্স সিটির কাছেই শুভেন্দু অধিকারীদের বাস আটকে দেয় পুলিশ, তখন মঙ্গলবার সেচমন্ত্রী ১৪৪ ধারা জারি থাকা এলাকার থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কী করে পৌঁছে গেলেন? বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, 'আটকালে সবাইকে আটকানো উচিত। আটকানো যে কত বেআইনি ছিল, তা বোঝা গেল হাইকোর্টে। ১৪৪ ধারাটাই তুলে দিল।' বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আবার বক্তব্য, 'আমরা চাই কলকাতা হাইকোর্ট সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিকে তাদের লেডি অফিসারদের দিয়ে টিম বানিয়ে ইমিডিয়েট অ্যাকশন নিক। যতদিন যাবে এভিডেন্স টেম্পার হবে। অথবা কম সময়ের মধ্যে জাতীয় মহিলা কমিশন বা NHRC-কে দিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করে, সরাসরি সিবিআইকে কোর্ট মনিটরিংয়ে দিয়ে দেওয়া হোক।'
মঙ্গলবার বিকেলে সেচমন্ত্রী পৌঁছন ন্যাজাট থানার দক্ষিণ আকরাতলায়। সেখান থেকে লঞ্চে করে বেতনি নদী পেরিয়ে যান ন্যাজাট থানার কালীনগরে। সেখানে হাজির ছিলেন, অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী ও সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো। কালীনদরে পৌঁছে দলের বিধায়ক-নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পার্থ ভৌমিক। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সুজন চক্রবর্তীর মতে, 'বিরোধীদের জন্য এক আইন, আর তৃণমূল নেতাদের জন্য এক আইন। তাই হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে।' সেচমন্ত্রীর অবশ্য বক্তব্য, 'ন্যাজাটে আমি যেখানে গিয়েছিলাম, সেখানে ১৪৪ ধারা নেই।' কিন্তু সেচমন্ত্রীর যে সফর ঘিরে এত বিতর্ক, সেই তিনি কী বার্তা দিলেন?  পার্থ ভৌমিকের আশ্বাস, 'যদি শিবু হাজরার বিরুদ্ধেও অভিযোগ সত্য়ি প্রমাণিত হয় তাহলে দল তাঁর বিরুদ্ধেও ব্য়বস্থা নেবে।'
সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শেখ শাহজাহানকে ৩৯ দিনেও তাঁকে ছুঁতে পারেনি পুলিশ-ইডি। এলাকার বেতাজ বাদশাকে ছাড়াই সন্দেশখালিকাণ্ডের পর মঙ্গলবার প্রথম বড়সড় বৈঠক করল তৃণমূল।


আরও পড়ুন:৩০ লক্ষের সোনা নিয়ে সীমান্ত পার, বাংলাদেশি মহিলাকে হাতেনাতে ধরল BSF