সমীরণ পাল, পেট্রাপোল: সীমান্তে ফের হাতেনাতে ধরা পড়লেন এক মহিলা চোরাকারবারী। নিজের শরীরে সোনা লুকিয়ে সীমান্ত পার করছিলেন তিনি। সেই সময় হাতেনাতে তাঁকে ধরে ফেলেন সীমান্তরক্ষীবাহিনীর মহিলা সৈনিকরা। তাঁর কাছ থেকে ২৯.২৬ লক্ষ মূল্যের সোনা উদ্ধার হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতের বাজারে ওই সোনা বিক্রির পরিকল্পনা ছিল। (India-Bangladesh Border)
সোমবার ওই মহিলাকে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে পাকড়াও করা হয়। দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অন্তর্গত ১৪৫ নং ব্যাটেলিয়নের আইসিপি পেট্রাপোলের মহিলা সৈনিকরা তাঁকে হাতেনাতে ধরেন। ওই মহিলা পাচারকারীর কাছ থেকে ৪৬৬.৫৬০ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়, যার বাজারমূল্য ২৯ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯৯৫ টাকা। (Gold Smuggling)
BSF সূত্রে জানা গিয়েছে, আইসিপি পেট্রাপোলের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ভ্রমণরত যাত্রীদের রুটিন চেকিং হয়। সোমবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা এক মহিলাকে দেখে সন্দেহ জাগে। ওই মহিলাকে থামান BSF-এর মহিলা সৈনিকরা। হ্যান্ড হেল্ট মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি চালাতে গেলে মহিলার শরীরে ধাতব পদার্থের উপস্থিতির ইঙ্গিত মেলে।
এর পরই ওই মহিলাকে তল্লাশি সার্কলে নিয়ে যান মহিলা সেন্টিনেল। সেখানে তল্লাশি চালানো হলে, মহিলার কাছ থেকে চারটি সোনার বিস্কিট উদ্ধার হয়। সোনা-সহ ওই মহিলাকে আটক করেন BSF-এর মহিলা সৈনিকরা। এর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় আনা হয় সীমান্ত চৌকিতে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার নাম নাজনিন নাহার। ঢাকার খিলগাঁওয়ের উইল-মোরাদিয়ার বাসিন্দা তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই মহিলা জানিয়েছেন, সংসার চালাতে ভারত থেকে চকোলেট, বিস্কিট ইত্যাদি বাংলাদেশে নিয়ে যেতেন তিনি। এবার বেনাপোল বাজারে আবিদুল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে সোনা পান, কলকাতার বাজারে সেটি হস্তান্তর করার কথা ছিল তাঁর। কাজে সফল হলে ৬০০০ টাকা পারিশ্রমিক পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইসিপি পেট্রাপোল হয়ে ঢোকার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে যান। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া সোনা শুল্ক দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তবাহিনীর জনসংযোগ আধিকারিক, ডিআইজি শ্রী এ কে আর্য বিএসএফ জওয়ানদের এই সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "যে সোনা চোরাকারবারীরা বার বার সোনা পাচারের চেষ্টা করেন, বিএসএফ সৈনিকরা ঘটনাস্থলেই তাঁদের পরিকল্পনা ভেস্তে দেন।" তিনি সীমান্তে বসবাসকারী লোকজনকে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত কোনও তথ্য পেলে বিএসএফ-এর সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য আবেদন করেন। এ বিষয়ে ১৪৪১৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যেতে পারে। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের আরও একটি নম্বর রয়েছে, ৯৯০৩৪৭২২২৭। চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজেও পাঠানো যাবে। সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে এবং গোপন রাখা হবে তাঁর পরিচয়।