বাগদা: সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে, দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীনে ৬৮তম বাহিনীর সীমা চৌকি মামা ভাগিনার জওয়ানেরা তল্লাশি অভিযানে এলাকার একজন কুখ্যাত চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করেন। তার বাড়ি থেকে মোট ৪৩ কেজি গাঁজা ও ৩৭১ বোতল ফেনসিডিল বাজেয়াপ্ত করে।


ঘটনাটি বাগদা (Bagdah) থানার অন্তর্গত নওদাপাড়া গ্রামের। ৬ই জানুয়ারি বিএসএফ নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য পায় যে, গ্রামের আলমগীর মণ্ডল, সুখদেব মণ্ডল, সুকুমার ও পবিত্রর বাড়িতে বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও ফেনসিডিল মজুত রয়েছে এবং চোরাকারবারীরা তা বাংলাদেশে পাঠাতে চলেছে।


খবর পাওয়া মাত্রই কোম্পানি কমান্ডার বাগদা থানায় খবর দেন। তারপরে রাত সাড়ে আটটায় জওয়ানরা গ্রামের সদস্যদের উপস্থিতিতে সন্দেহভাজন বাড়িগুলিতে হানা দেয়। আলমগীর মণ্ডলকে তার বাড়ি থেকে ৪৩ কেজি গাঁজা ও ৩৭১ বোতল ফেনসিডিল-সহ আটক করা হয়।


তবে চোরাকারবারীকে নিয়ে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীরা জওয়ানদের উপর হামলা চালায়। বিএসএফ জওয়ানরা যখন আলমগীর মণ্ডলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তার সহযোগী চোরাকারবারীরা অতর্কিতভাবে লাঠি ও পাথর নিয়ে জওয়ানদের ওপর হামলা চালায়। এতে চারজন বিএসএফ জওয়ান গুরুতরভাবে আহত হন। কিন্তু বিএসএফের জওয়ানরা আলমগীরকে ধরে সীমা চৌকি  মামাভাগিনাতে  নিয়ে আসে।


অভিযোগ, ধৃত চোরাকারবারীর সহযোগী সহদেব রাই, কালকমান দফাদার, টোটাল মণ্ডল, লাল্টু মণ্ডল, রাজাক মণ্ডল, হুসেন মণ্ডল, জাহিদুল দফাদার, জাহান আলি মণ্ডল এবং মিজানুর মণ্ডল প্রথমে বিএসএফ জওয়ানদের উপর হামলা চালায়। তারপর সীমান্তে নজরদারি করার জন্য লাগানো  সিসিটিভি ক্যামেরা, রেকর্ডার, কম্পিউটার এবং কন্ট্রোল রুম  ভাঙচুর করে বিএসএফের সম্পত্তির প্রচুর ক্ষতি করেছে । বিএসএফের অতিরিক্ত দল এবং বাগদা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেখান থেকে দুর্বৃত্তদের ধাওয়া করে এবং আহত জওয়ানদের ঘটনাস্থল থেকে বার করে বাগদা হাসপাতালে পাঠায়। আহত জওয়ানের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাহাকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।


ঘটনাস্থল থেকে ছত্রভঙ্গ হওয়ার পরে, উত্তেজিত জনতা চোরাকারবারীকে ছাড়ানোর জন্য মামা ভাগিনা সীমা চৌকিতে ঘেরাও করে। কিন্তু বিএসএফ জওয়ানরা তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়।


ধৃত চোরাকারবারি এনসিবি-র  মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় ছিল। অভিযোগ, গত ছয় বছর ধরে সে চোরাকারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল।জিজ্ঞাসাবাদে চোরাকারবারি জানায়, সে গত ৬ বছর ধরে এই ধরনের চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।  চোরাকারবারি এনসিবি তালিকায় কুখ্যাত কিন্তু এর আগে কখনও তাকে হাতেনাতে ধরা যায়নি।  ধৃত পাচারকারী এবং বাজেয়াপ্ত করা মাল এনসিবি, কলকাতায়  হস্তান্তর করা হবে।  এর পাশাপাশি, বিএসএফ জওয়ানদের উপর হামলাকারী এবং সরকারি সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্থ করা   দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বাগদা থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।


কৃষ্ণনগরের ডিআইজি, আঞ্চলিক সদর দফতর, সঞ্জয় কুমার বলেছেন যে, বিএসএফ জওয়ানরা সর্বদা সীমান্তে সতর্কতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করে এবং  সীমান্তে অপরাধ বন্ধ করতেও ক্রমাগত সফল হচ্ছে।  তিনি আরও বলেন যে, বিএসএফের ক্রমাগত পদক্ষেপে চোরাকারবারি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সমস্যায় পড়েছে।  প্রতিশোধের স্পৃহা থেকেই জওয়ানদের ওপর হামলা চালায়। তিনি আরও বলেছেন যে, পাচারকারীকে যারা সাহায্য করেছিল, তাদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।