সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা : এবার উত্তর ২৪ পরগনায় নিজেদের দখলে থাকা বুথেই জোড়া ভূতুড়ে ভোটারের হদিশ পেল তৃণমূল। এ এক আজব কাণ্ড ! ব্যারাকপুর ২ নম্বর ব্লকের বিলকান্দা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর যোগেন্দ্রনগর গ্রামে ২৩১ নম্বর বুথের ভোটার তালিকায় মিলল আজব কারচুপি !  কার্তিক সাহা কনামে এ ব্যক্তির দুই স্ত্রীর অস্তিত্ব রয়েছে সেখানে। কিন্তু বাস্তবে তাঁর নাকি একজনই স্ত্রী ! ভোটার তালিকায় একজনের নাম যমুনা সাহা, আরেকজন সুমনা সাহা। যমুনার খোঁজ মিললেও, সুমনার অস্তিত্ব শুধু ভোটার তালিকায়। কার্তিক সাহাকে প্রশ্ন করতেই তাঁর জবাব, 'হ্যাঁ, একটাই স্ত্রী, আমার ২টো স্ত্রী হবে কীসের জন্য?' কার্তিকের দাবি, ' নামটা যদি ভুল করে দেয় আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা কী করে জানব!  যমুনা সাহা হবে , সুমনা সাহাটা ভুল করেছে।' ভুল হলে তা জানাননি কেন ? 'আমাদের দরখাস্ত জমা দেওয়া হয়েছিল BDO অফিসে। তারপরে কী হয়েছে খোঁজখবর নিইনি। আমরা যখন ভোট আসছে ভোট দিচ্ছি'।

Continues below advertisement

কিন্তু যমুনা সাহা কি ভোটার তালিকায় তাঁর এই সতীনের অস্তিত্ব জানতেন ? বিলকান্দার যমুনা জানালেন, তিনি জানতেন, সুমনা নামে একজনের নাম ভোটার লিস্টে উঠেছে। তাঁর দাবি, তিনি ভুল শুধরাতেও গিয়েছিলেন। দুই বার যাওয়ার পর অফিস থেকে বলে দেওয়া হয়,  ' হয়ে গেছে । তারপর কী হয়েছে না হয়েছে আমি বলতে পারব না। আমি তো প্রতি বছর, যখন ভোট হলে ভোট দিতে যাই।' অর্থাৎ  প্রশাসনকে বারবার বলা সত্বেও বছর ২০ ধরে তালিকা থেকে সুমনা সাহার নাম সরানো যায়নি।  কার্তিক সাহার মায়ের দাবি, তাঁরা গেলেই বলা হয় 'আপনার কোনও চিন্তা নেই, আপনি যান কেটে দেব।' 

তৃণমূলের অভিযোগ, এই বুথেই মৃত যমুনা রায়ের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে গিয়ে দেখা যায়, আগেই তাঁর নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। উল্টে একই এপিক নম্বরে যমুনা রায়ের বদলে যমুনা হালদারের নামে নতুন ভোটার কার্ডও তৈরি হয়ে গেছে। ভোটার তালিকায় গরমিলের দায় নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে চাপিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির কটাক্ষ, এতদিন এই ভূতুড়ে ভোটারদের ভোটেই তৃণমূল জিতেছে, এখন নাটক করছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

Continues below advertisement

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।