সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: গ্রামীণ হাসপাতাল। বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দদের সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা পেতে ভরসা ওই হাসপাতাল। কিন্তু সপ্তাহ দুয়েক ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে সেটি। উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের (Rural Hospital) ছবি এমনটাই। এই ঘটনায় প্রবল সমস্যায় পড়েছেন গোবরডাঙা, স্বরপনগর, গাইঘাটার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ।


পুর এলাকা ছাড়াও আশেপাশের ১৫টি পঞ্চায়েতের ৫ লক্ষ মানুষের ভরসা এই হাসপাতাল (Hospital)। কিন্তু ২ সপ্তাহ ধরে বন্ধ এই হাসপাতাল। কেন এমন ঘটনা? উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, সম্প্রতি হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসক অবসর নেন। তাছাড়া, আরও ২ জন চিকিৎসক কাজ ছেড়ে চলে যান। এরপর জানুযারির শেষ সপ্তাহ থেকে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালটি। করোনাকালে পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হতেই, গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের কোভিড পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে অন্যান্য রোগীও ভর্তি নেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। চালু ছিল শুধুমাত্র আউটডোর। এবার সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক না থাকায় এখন হাসপাতাল চালানো সম্ভব হচ্ছে না। গোবরডাঙা ছাড়াও, বনগাঁ, স্বরপনগর, গাইঘাটার বাসিন্দারাও এই হাসপাতালের ওপর নির্ভর করেন। ফলে চরম সমস্যা বিস্তীর্ণ এলাকায় বাসিন্দারা। 


হাসপাতাল-নামা:
২০০১ সালে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতাল পরিচালনার ভার জেলা পরিষদকে দেয় রাজ্য সরকার। ২০১৪ সালে এই হাসপাতাল বন্ধ করে দেয় তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদ। ২০১৭ সালে ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে এই হাসপাতাল খোলার দাবি জানান গোবরডাঙা পুরসভার তৎকালীন প্রধান সুভাষ দত্ত। ২০২০ সালে সেই গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতাল পরিচালনার ভার ফের জেলা পরিষদের থেকে নিজেদের হাতে নেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতির আগে ফের দায়িত্ব নেয় জেলা পরিষদ। 


হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপের সুর গোবরডাঙার তৎকালীন পুরপ্রধান সুভাষ দত্তর। তিনি বলেন, 'চেষ্টা করেছিলাম। এবার তো দল টিকিটও দেয়নি।' হাসপাতালের বিষয়টি নিয়ে গোবরডাঙা পুরসভার বর্তমান প্রধান ও তৃণমূল নেতা শঙ্কর দত্ত বলেন, 'স্বাস্থ্য দফতর কে জানিয়েছে।'


শুরু তরজা:
হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে ভাঁওতাবাজি করার অভিযোগ করেছেন গোবরডাঙার বিজেপির (BJP) মণ্ডল সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের সভাধিপতি বীণা মণ্ডল জানিয়েছেন, কিছু সমস্যা হয়েছে, সেগুলি রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে।


আরও পড়ুন: প্রতিশ্রুতি মতো চাকরি মেলেনি, দখল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন, ভোগান্তি রোগীদের