সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগণা: আইনি জটিলতা। আর তার জেরেই থমকে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার গোঁসাইপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাজ। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন রয়েছে। কিন্তু সেই ভবনে পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ সেখানে বসবাস করছে একটি পরিবার। সেখান থেকে তাঁদের তোলা যাচ্ছে না। কেন এমন ঘটনা?
কী সমস্যা:
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হাবিব রেজা চৌধুরী জানান, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনে একটি পরিবার বসবাস করছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনটি ৩ নাবালিকা কন্যা সন্তানের নামে রয়েছে। তাঁর দাবি, ওই পরিবারের পুরুষ সদস্য মানসিক ভারসাম্যহীন। ওই ব্যক্তির স্ত্রী বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। যে জমিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছে সেটি ওই পরিবারের জমি। সেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে উঠলে ওই পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি না মেটানোয় ওই পরিবার স্বাস্থ্যকেন্দ্র দখল করে রেখেছে। ফলে প্রশাসনিক জটে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবনের ব্যবহার এখন বিশবাঁও জলে।
প্রবল ভোগান্তি:
চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২টি সংসদের প্রায় ৮ হাজার মানুষ এই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের কখনও খোলা আকাশের নিচে, কখনও বাসস্টপে, কখনও পঞ্চায়েত অফিসে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজ চালাতে হচ্ছে। একাধিকবার ব্লক স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, বিডিও ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে লিখিতভাবে জানিয়েও উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র দখল মুক্ত করা যায়নি বলে অভিযোগ চাঁপাতলার প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর। গোঁসাইপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মী রুনা খাতুন বলেন, 'একাধিকবার স্বাস্থ্য দফতরে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছি, কোনও কাজ হয়নি। বর্ষার সময় গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে খুব সমস্যার মধ্যে দিন কাটাতে হয়। অবিলম্বে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি দখল মুক্ত করা হলে আমরা উপকৃত হব।'
রাজনৈতিক তরজা:
গোটা ঘটনায় বিজেপি কটাক্ষ করেছে। বারাসাত সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, 'তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের কারণে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। এক গোষ্ঠী চাইছে ওই পরিবারটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসবাস করুক, অপর গোষ্ঠী চাইছে উচ্ছেদ করতে। এই কারণে হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।'
দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির জনসাস্থ্যের কর্মাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, 'এ বিষয় নিয়ে বিডিও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকার ও জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে আমরা দ্রুতই বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দখল মুক্ত করব।'