সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা :  প্রাক্তন বিধায়ক, পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর-সহ ৪১ জন তৃণমূল নেতা-নেত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় পদক্ষেপ নিল ব্যারাকপুর কমিশনারেট। কারও নিরাপত্তা পুরোপুরি তুলে নেওয়া হল। কারও ক্ষেত্রে কমানো হল নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা।


জগদ্দলের প্রাক্তন বিধায়ক পরশ দত্ত, আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস, নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভানেত্রী আলোরানি সরকার, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ভাইপো সৌরভ সিং, ভগ্নিপতি সুনীল সিং-সহ তৃণমূলের একঝাঁক নেতা-নেত্রী। আজ থেকেই কার্যকরী হচ্ছে এই সিদ্ধান্ত। বাহিনীতে ঘাটতি থাকায়, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। 


প্রসঙ্গত, রাজ্যে এর আগেও বহুবার নিরাপত্তা ইস্যুতে অদলবদল হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণেই হারিয়েছে প্রাণ নেতা-দেশ-বিদেশের প্রধানমন্ত্রীর। যদি একটু পিছনে ফিরে দেখা যায়, একটা সময় জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পেতেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।  তখন তিনি কলকাতার মেয়র, রাজ্যের দমকল মন্ত্রী। কিন্তু আচমকাই তখন তার জেড প্লাস ক্যাটাগরির বদলে নিরাপত্তা কমিয়ে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে বিতর্কে ওঠে। যদিও সেসব এখন অতীত। তিনি নেই এখন সেই পদে, নাই বা আছে সেই বিতর্ক। 


সাল ২০২২। নিরাপত্তা ছেঁটে ফেলা হয়েছিল রাজ্যের আরও এক মন্ত্রীর। রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর নিরাপত্তাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী রেখে দিয়ে বাকি সমস্ত নিরাপত্তা ও এসকর্ট গাড়ি তুলে নেওয়া হয়েছিল, তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। কিন্তু কেন ? মূলত তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য তুলে নেওয়া হয়েছিল তার নিরাপত্তা। মূলত ভাইরাল হয় মন্ত্রীর একটি ভিডিও। যেখানে মিমি, নুসরত, জুন সহ একঝাক নেতা নেত্রী দলে লুটেপুটে খাচ্ছে বলে মন্ত্রীকে বলতে দেখা যায়। এরপরেই শো-কজ করা হয় মন্ত্রীকে। যদিও তিনি কিছু জানেন না, বলেই সেবার প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো।


আরও পড়ুন, কয়লা পাচার মামলায় বীরভূমের আইসিকে জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের


তবে এই দৃশ্যের উল্টোদিকও রয়েছে। পাণিহাটির তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্তের খুনের ঘটনার পর তৃণমূলের কাউন্সিলর হন মীনাক্ষী দত্ত। প্রাণহানির যাতে কোনও ঝুকি পুনরায় না আসে, তাই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল তাঁর ক্ষেত্রে। পাশাপাশি বছরের শুরুতেই রাজ্যপালের নিরাপত্তা বাড়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মূলত রাজ্যপালের জীবনের ঝুঁকি আছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গোয়েন্দা রিপোর্টে এমনই উল্লেখ করা হয়। গোয়েন্দা রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বাড়ানো হয় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নিরাপত্তা। এরপর থেকে জেড প্লাস নিরাপত্তা পাচ্ছেন রাজ্যপাল।