সমীরণ পাল, অনির্বাণ বিশ্বাস ও রাজীব চৌধুরী, উত্তর ২৪ পরগনা: নেতা কে? নেতা কাকে বলা যায়? এই নিয়েই মন্তব্য তৃণমূল বিধায়কের। আর তারপরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের মন্তব্যের পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
কোন মন্তব্যে শুরু বিতর্ক?
একটি ভিডিওতে তাপস রায়কে বক্তব্য রাখতে দেখা গিয়েছে। সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। সেই ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে, তাপস রায় বলছেন, 'সবাইকে নেতা বলবেন না। নেতা হওয়া সহজ নয়।' বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, 'আমরা অনেককেই নেতা বলি। এ নেতা, সে নেতা, ও নেতা। নেতা অত সহজে হয়?' এই মন্তব্যের পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। রবিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে নেতৃত্বে প্রসঙ্গে এমন তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়ক। কে নেতা, সেটাও বলেছেন তিনি। তাপস রায় বলেন, 'নেতা বাংলায় একজন এই মুহূর্তে। দুই, তিন, চারজন নয়। সেটা আপনারা জানেন, আমিও জানি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতা হওয়া অত সহজ নয়, বললেই হয় না।'
বিরোধীদের কটাক্ষ:
নেতৃত্ব নিয়ে তাপস রায়ের এই মন্তব্যে ফের জল্পনা শুরু হয়েছে। এই মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধী বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'ওঁকে মাঝেমাঝে নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে পড়াশোনা করতে বলব। উনি যে ভুল ধারণায় আক্রান্ত হয়েছেন তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন বলে মনে হয়।' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'ভাইপোর দলে নবীনের সংখ্যা বেশি তাই তৃণমূলে এখন নবীন প্রবীণের দ্বন্দ্ব প্রকট।'
সাম্প্রতিককালে বরানগরের এই বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্য ঘিরে বারবার জল্পনা হচ্ছে। সম্প্রতি দলের ছাত্রনেতাদের আচরণ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তাপস রায়। নিজের বিধানসভা এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, 'আমি তখন দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী, পাড়ার ছেলে, জেনারেল সেক্রেটারি, তাকে একটা চড় মারলেন প্রিন্সিপাল। আজকের দিনে ভাবতে পারেন, কলেজের জেনারেল সেক্রেটারি, ছাত্র পরিষদের ইউনিয়ন, তার গালে একটা চড় দেবেন প্রিন্সিপাল। তারপর প্রিন্সিপাল বাড়ি ফিরে যাবেন? এটা আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলব যে, সেই শিক্ষকও নেই, সেই ছাত্রও নেই। এরকম গোছের একটা ছাত্র সমাজ হয়েছে। শিক্ষকরাও কিন্তু সেই আগের শিক্ষক নেই। সমাজের অবক্ষয় তো সর্বত্রই পৌঁছেছে। কিন্তু যদি সমাজ কর্মী, রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষক, ছাত্র, এদের মধ্যে বেশি মাত্রায় পৌঁছয়, সেটা কিন্তু সর্বনাশা সমাজের জন্য এবং দেশের জন্য।' তখন প্রশ্ন উঠেছিল, এই বক্তব্যের মাধ্যমে কাদের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি। কারণ বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে। সেই আবহে দলের বিধায়কের এমন মন্তব্যে তৈরি হয়েছিল জল্পনা।
আরও পড়ুন: রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড, বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে চূড়ান্ত প্রস্তুতি