সমীরণ পাল, বসিরহাট: সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (Border Security Force) এক মহিলা জওয়ানের কাছ থেকে খোয়া যাওয়া রাইফেল (Rifle) ও গুলি (Bullets) উদ্ধার করতে মেটাল ডিটেক্টর ও শতাধিক পুলিশকর্মী নিয়ে অভিযানে নামল উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) বসিরহাট (Basirhat) জেলা পুলিশ। বসিরহাটের ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত থেকে লোপাট হওয়া ইনসাস রাইফেল ও ২০ রাউন্ড গুলি খুঁজে বের করতে বিভিন্ন জায়গায় মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে বসিরহাট জেলা পুলিশ।


বসিরহাটে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তল্লাশি


গত সোমবার ভোর রাতে বসিরহাটে ঘোজাডাঙা সীমান্তে বিএসএফের এক মহিলা কনস্টবলের কাছ থেকে একটি ইনসাস রাইফেল (INSAS rifle) ও ২০ রাউন্ড গুলি লোপাট হয়ে যায়। এই ঘটনার তদন্ত নামে বিএসএফ। কিন্তু বিএসএফ জওয়ানরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়েও উদ্ধার করতে পারেননি রাইফেল। শেষপর্যন্ত এই ঘটনার চারদিন পরে রাইফেল উদ্ধারের নামল বসিরহাট জেলা পুলিশ। তিনটি থানা থেকে শতাধিক পুলিশকর্মীকে নিয়ে সীমান্তের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রফতানির ট্রাকের পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকগুলিতেও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তবে এদিন সকাল থেকে সীমান্তের বিভিন্ন প্রান্তে চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও, এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি বিএসএফের লোপাট হওয়া রাইফেল, গুলি।


বাংলাদেশ থেকে ভারতে টাকা পাচারের অভিযোগ


অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে টাকা পাচারের অভিযোগ উঠল। বেআইনি টাকার হদিশ পেতে শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে তিনটি, দমদমের একটি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দু’টি জায়গা মিলিয়ে মোট ১০টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। এদিন সকাল থেকে ইডি-র প্রায় ৬০-৭০ জন আধিকারিক একাধিক দলে ভাগ হয়ে তল্লাশি অভিযান চালান। 


কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ফিনানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দেখে, সে দেশের একাধিক ব্যাঙ্ক থেকে ৫০টির বেশি কোম্পানির নাম করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। তদন্তে নেমে দেখা যায়, ঋণ নেওয়া টাকার একটা বড় অংশ হাওয়ালার মাধ্যমে পাচার হয়েছে বাংলা-সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। বাংলাদেশ সরকারের থেকে এই তথ্য পাওয়ার পরেই সক্রিয় হয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। 


ইডি সূত্রে দাবি, বাংলাদেশের তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, এই আন্তর্জাতিক টাকা পাচার চক্রের কিংপিন প্রশান্তকুমার হালদার। বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। বাংলাদেশী হলেও, এপার বাংলায় ঢুকে নিজেকে ভারতীয় বলে পরিচয় দেন প্রশান্তকুমার পাল। তিনি নিজেকে পরিচয় দেন শিবশঙ্কর হালদার বলে। এমনকী, এদেশে ভুয়ো আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড তৈরি করেন তিনি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সেইসব জাল নথি ব্যবহার করে এদেশে প্রশান্ত কুমার পাল ও তাঁর সহযোগীরা প্রায় হাজার কোটি টাকা পাচার করেন। প্রশান্তকুমার হালদারের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। কিন্তু হাওয়ালার মাধ্যমে এদেশে ঢোকা টাকা গেল কোথায়?  এর নেপথ্যে কি কোনও প্রভাবশালীর হাত রয়েছে? বেআইনি টাকার অংশ এই প্রভাবশালীদের হাতে যায়নি তো? এখন এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা।