সমীরণ পাল, হাবরা: একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভিটে মাটি হারিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তেমনই ক্ষতির মুখে পড়েছে অবলা প্রাণীরাও। আমফান, ইয়াস, রেমালের মতো ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রাম বাংলার পাখির দল। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে মানুষের মতই গৃহহীন তারা। তাই এবার তাদের জন্য অভিনব ভাবন। গাছে মাটির কলসি ঝুলিয়ে তাদের বাসা উপহার দিচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) হাবরার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পাখিদের নীড়ে ফেরার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন এই সংস্থার সদস্যরা।
পাখিদের জন্য কৃত্রিম বাসার বন্দোবস্ত: ঝড় চলে গেছে, কিন্তু ক্ষত চিহ্ন এখনও রয়ে গেছে এরাজ্যে বুকে। একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব শেষ করেছে পাখিদের নীড়ে ফেরার আশা। ঝড়ের দাপটে একের পর এক মহীরুহের পতন বাংলার পক্ষীকূলের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে তাদের বাসা। কোথাও আবার দামাল বাতাসের জেরে আঘাত পেয়েছে বহু পাখি। গাছের নীচে মরে পড়ে থাকতে দেখা গেছে চড়ুই, বুলবুলি, মাছরাঙার ছানাদের ছোট্ট দেহখানি। তবে সেই নীড়হারা পাখিদের জন্য নয়া উদ্যোগ নিয়েছে হাবরার টুনিঘাটা পিপিলস মুভমেন্ট অফ হিউম্যান রাইটস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। মাটির কলসির ভিতরে দড়ি, বিচুলিস খড় দিয়ে তারা তৈরি করছে কৃত্রিম বাসা। আর তা গ্রাম বাংলার মধ্যে গাছের ডালে ডালে টাঙিয়ে দিচ্ছে তারা। বাসার মধ্যে জলেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে পাখিদের জন্য। পাখিদের জন্য আউশ ধানের চাল খাবার হিসেবে ওই বাসার মধ্যে দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃতির কোলে পাখিদের ফিরিয়ে দিতে কয়েক বছর ধরে এই কাজ করে চলেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।
প্রথমে আমফান ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে পাখিদের ঘরছাড়া হতে দেখে কৃত্রিম বাসা বানানোর পরিকল্পনা করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংস্থার সদস্য ছন্দা মজুমদার, মিন্টু হালদার,অমিত বিশ্বাস,রাহুল মোহন্ত ও সায়ন বাগচীরা বুধরহাটি বানিপুর হাবরার বিভিন্ন এলাকায় মাটির হাঁড়ির মধ্যে খড়কুটো দিয়ে কৃত্রিম বাসা তৈরি করে গাছের ডালে ডালে টাঙিয়ে দিচ্ছে। এই পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক সঞ্জীব কাঞ্জিলাল। তিনি বলেন “আমরা ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০-৫০ টা গাছে পাখিদের জন্য এভাবে বাসা তৈরি করে দিয়েছি। আমরা পশু পাখিদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছি। আমফান পরবর্তী সময়ে এই কাজের গুরুত্ব আরও বেশি করে অনুভব করছি। তাই আমরা এই অবলাদের পাশে আছি ও থাকব। পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে পাখিদের ভীষণ প্রয়োজন। শুধু তাই ই নয়, এক দল মানুষ প্রতিনিয়ত পাখি শিকার করার চেষ্টা করছে। ফলে পরিযায়ী পাখিদের দেখা মিলছে কম। পাখিদের রক্ষা করতে এবং পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই এই উদ্দ্যোগ।''
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।