নয়াদিল্লি: ধর্মীয় অনুষ্ঠান বদলে গেল মৃত্যুমিছিলে। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে "সৎসঙ্গ'-এ গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলেন ১২১ জন। মৃতের তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু শিশুও। ৫০ হাজারের অনুমতি নিয়ে ওই 'সৎসঙ্গ'-এ প্রায় ২.৫ লক্ষ লোক জড়ো করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে (Hathras Satsang Stampede)। ফলে প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ, স্বঘোষিত ধর্মগুরু 'ভোলে বাবা'। বার বার আইন লঙ্ঘন করেও কীভাবে পার পেয়ে গিয়েছেন তিনি, উঠছে প্রশ্ন। (Deadly Stampede Incidents)
তবে হাথরসই প্রথম নয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বার বার-
- ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ মধ্যপ্রদেশের ইন্দৌরের একটি মন্দিরে রাম নবমী উপলক্ষে যজ্ঞ চলছিল। একটি প্রাচীন জলাধারের উপর মঞ্চ বেঁধে চলছিল যজ্ঞ। আচমকাই সবসুদ্ধ ভেঙে পড়ে। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সবমিলিয়ে ৩৬ জন মারা যান।
- ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে উপচে পড়া ভিড় ছিল। কে আগে পৌঁছবেন, সেই নিয়ে চলছিল ঠেলাঠেলি। পদপিষ্ট হয়ে ১২ জন মারা যান।
- ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশে 'পুষ্করম উৎসবে'র সূচনাপর্বে গোদাবরীতে ডুব দিতে ভিড় করেন বহু মানুষ। ভিড়ের মধ্যে পদপিষ্ট হয়ে ২৭ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়। আহত হন বহু।
- ২০১৪ সালের ৩ অক্টোবর বিহারের পটনার গাঁধী ময়দানে পদপিষ্ট হয়ে ৩২ জন মারা যান। আহত হন বহু। দশেরা উপলক্ষে সেখানে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ।
- ২০১৩ সালের ১৩ অক্টোবর মধ্যপ্রদেশের রত্নাগড় মন্দিরের কাছে পদপিষ্ট হয়ে ১১৫ জন মারা যান। বহু মানুষ আহত হন। সেখানে নবরাত্রির উৎসব চলছিল। নদীর উপর একটি সেতু ছিল। সেটি নড়ছে বলে গুজব রটে। তাতেই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়।
- ২০১২ সালের ১৯ নভেম্বর বিহারের পটনায় ২০ জন মারা যান। আহত হন অনেকে। গঙ্গার তীরে, আদালত ঘাটে ছট পুজো চলছিল। অস্থায়ী একটি সেতু গড়া হয়েছিল। সেটি বসে যাওয়াতেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
- ২০১১ সালের ৮ নভেম্বর হরিদ্বারে পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ২০ জন। গঙ্গার তীরে হর-কি-পউরি ঘাটে পদপিষ্ট হয়ে আহতও হন অনেকে।
- ২০১১ সালের ১৪ জানুয়ারি কেরলের ইদুকি ডেলায় পদপিষ্ট হয়ে ১০৪ জন মারা যান। আহত হন কমপক্ষে ৪০ জন। শবরীমালা উপলক্ষে ভিড় জমিয়েছিলেন পুণ্যার্থীরা। সেই সময় একটি জিপ নিয়ন্ত্রণ হারিয় এক পুণ্যার্থীকে ধাক্কা মারে। তাতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়।
- ২০১০ সালের ৪ মার্চ উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ার জেলার রাম জানকি মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ৬৩ জনের মৃত্যু হয়। সেখানে এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু সভা করছিলেন। বিনামূল্যে খাবার এবং জামা-কাপড় বিতরণ হচ্ছিল।
- ২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাজস্থানের জোধপুর শহরে চামুণ্ডা দেবী মন্দিরে বোমাতঙ্ক দেখা দেয়। খবর কানে আসতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় চারিদিকে। ২৫০ জন মারা যান। আহত হন কমপক্ষে ৬০।
- ২০০৮ সালের ৩ অগাস্ট হিমাচলপ্রদেশের বিলাসপুরের নয়না দেবী মন্দীরে পদপিষ্ট হয়ে ১৬২ জন মারা যান। আহত হন প্রায় ৫০ জন। পাহাড় থেকে পাথর গড়িয়ে পড়ছে বলে গুজব ছড়ায়, তাতেই হুলস্থুল বাধে।
- ২০০৫ সালের ২৫ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার মান্ধারদেবী মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে ৩৪০ জন মারা যান। শতাধিক মানুষ আহত হন। সিঁড়িতে নারকেল ভাঙছিলেন পুণ্যার্থীরা। সেখানে পা রাখতেই পিছলে যান অনেকে। তাতেই চাপা পড়েন অনেকে। হুড়োহুড়িতেও পদপিষ্ট হন বহু।
- ২০০৩ সালের ২৭ অগাস্ট মহারাষ্ট্রের নাসিকে কুম্ভ মেলার আয়োজন হয়। সেখানে পবিত্র স্নানের জন্য ভিড উপচে পড়ে। পদপিষ্ট হয়ে ৩৯ জন মারা যান। আহত হন প্রায় ১৫০ মানুষ।