সমীরণ পাল, দেগঙ্গা: উৎপাতে বাড়ির বাইরে পা রাখাই দায় হয় উঠেছিল। ঝুঁকি নিয়ে বেরিয়েছিলেন যাঁরা, শিয়ালের কামড় খেয়েই ফিরতে হয়েছে তাঁদের। বার বার অভিযোগ জানিয়েও প্রশাসনের তরফে সাহায্য় মেলেনি বলে অভিযোগ। তাতে দেগঙ্গায় গ্রামবাসীরা একটি শিয়ালকে পিটিয়েই মেরে ফেললেন বলে অভিযোগ উঠছে (Fox Beaten to Death)।


দেগঙ্গায় শিয়ালকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ


উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas News) দেগঙ্গার (Dengala News) ঘটনা। সেখানকার হাদিপুর ঝিকরা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষজনের হাতেই শিয়ালটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। শিয়াল বত্যা বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী।  তাই বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে হাদিপুর পূর্ব বাড়ার বাসিন্দা ধীরেন মুন্ডা নামের এক কৃষক মাঠে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে আক্রমণ করে ওই শিয়ালটি। নিজেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন ওই কৃষক। প্রায় ৩০ মিনিট শিয়ালটির সঙ্গে কসরত চলে তাঁর।


ধীরেনের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। লাঠিসোটা নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন তাঁরা। কোনও রকমে ধীরেনকে প্রাণে বাঁচিয়ে ফেলেন তাঁরা। কিন্তু শিয়ালটি ক্ষিপ্ত এবং আক্রমণাত্মক হওয়ায় স্থানীয়রা তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলন বলে অভিযোগ।


আরও পড়ুন: Manik Bhattacharya : পদের সুযোগ নিয়ে, ছেলেরও আয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক, বলে দিলেন মানিক-ঘনিষ্ঠই


সরকারের তরফে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে জোর দেওয়া হচ্ছে যখন, সেই সময়ই পিটিয়ে শিয়াল মেরে ফেলার ঘটনাটি সামনে এসেছে। এই ঘটনা দণ্ডনীয় অপরাধের আওতায় চলে আসছে। কিন্তু তাঁরা এমন করতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের। তাঁদের দাবি, গত এক মাসে ওই শিয়াল গ্রামের কমপক্ষে ২৫ জনকে ওই শিয়ালটি কামড়েছে। তা নিয়ে অভিযোগ জানালেও, প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।


স্থানীয়দের দাবি, শিয়ালের উৎপাত নিয়ে বার বার অভিযোগ জানানো হয়েছে। খবর পাঠানো হয়েছে বন দফতরে। কিন্তু কারও তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তাই আত্মরক্ষায় হাতে লাঠি তুলে বাধ্য হন তাঁরা। আর আত্মরক্ষা করতে গিয়েই শিয়ালটিকে পেটাতে শুরু করেন তাঁরা। তাতেই মৃত্য়ু হয়েছে। এই ঘটনায় বন দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন সকলে।


বন দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ স্থানীয়দের


বন দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের বনভূমির কর্মাধ্যক্ষ এিটিএম ফারহাদ। তিনি জানান, বণ্যপ্রাণী হত্যা দণ্ডনীয়। কেন কেমন ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, হাদিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে শিয়ালের উপদ্রব কমাতে খুব শীঘ্র বনদফতরের তরফে পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।