দত্তপুকুর: উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় তীব্র বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে উঠল বিস্তীর্ণ এলাকা (Illegal Fireworks Factory)। আর এই বিস্ফোরের নেপথ্য তৃণমূল যোগ রয়েছে বলে সামনে এল অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, যে বাড়িতে বেআইনি বাজি কারখানা গড়ে উঠেছিল, সেই বাড়ির মালিক সামসুল আলি ওরফে 'খুদে' আসলে তৃণমূলের (TMC) কর্মী। (Duttapukur Incident)


স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী সামসুল ওরফে 'খুদে'। এমনকি প্রশাসনের মদতেই তাঁর বাড়িতে বেআইনি বাজি কারখানা এবং বাজির আড়ালে বোমা তৈরি হত বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, বাড়িটি ভাড়া দিয়ে মোটা টাকা রোজগার করেন সামসুল। এখানেই মাল তৈরি হয়। তার পর ওর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ছাদে শুকানো হয়, শেষে মজুত করে রাখা হয় ঘরে। স্থানীয়দের অভিয়োগ, রাজ্যের  খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষও সব জানতেন। বছর চার-পাঁচেক আগে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কাজ হয়নি।


এই ঘটনায় রথীন বা তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তবে এই ঘটনায় মারাত্মক সব অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের মদত ছিলই। প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগসাজশও ছিল অভিযুক্তের। সব জেনেও পুলিশের ভূমিকা ছিল নিষ্ক্রিয়। তারই সুযোগ নিয়ে জনবহুল এলাকায় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত করে রাখা হয়েছিল। বিস্ফোরণস্থলে গেলে এদিন সেই নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বচসাও বাধে পুলিশের।


আরও পড়ুন: Duttapukur Incident:ছিন্নভিন্ন পড়ে দেহ, ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ দত্তপুকুরের বেআইনি বাজি কারখানায়


যে সামসুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিও বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, বসতি এলাকাকে বারুদের স্তূপে পরিণত করেছিলেন সামসুলই। তাঁরা অনেক প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ থেকে তৃণমূলের নেতা, সবাই টাকা খেয়ে মুখ বন্ধ করে বসেছিলেন। সরাসরি দত্তপুকুর থানার আইসি-কে কাঠগড়ায় তুলেছেন কেউ কেউ।


রবিবার সকালে দত্তপুকুরের মোচপোল এলাকায় ওই বেআইনি বাজি কারখানায় তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে।  তাতে এখনও পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এখনও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ছিন্নভিন্ন দেহ। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আশপাশের একাধিক বাড়ি। বেশ কয়েকটি বাড়ির চালও উড়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে দেওয়াল। তিন শিশু, মহিলা-সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।


এই বিস্ফোরণের পর, এলাকার আরও একটি বাড়িতে বেআইনি বাজি মজুত রয়েছে বলে দাবি করে ভাঙচুর চালান স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের মদতেই বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বেআইনি বাজি তৈরি হত। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় র‍্যাফ নামানো হয়েছে। এর আগে ২০ মার্চ, মহেশতলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে তিন জনের মৃত্যু হয়।  এরপর ১৬ মে, এগরার খাদিকুল গ্রামে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ-সহ ১২ জনের। ২২ মে, বজবজে বেআইনিভাবে মজুত বাজিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রাণ যায় একই পরিবারেরl তিন জনের। পরের দিনই ২৩ মে, মালদার ইংরেজবাজারে নেতাজি কমার্শিয়াল মার্কেটে বাজির দোকানে কার্বাইডের ড্রাম ফেটে আগুন লেগে ঝলসে মৃত্যু হয় দু'জনের।