আব্দুল ওয়াহাব, সন্দেশখালি: সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। 


উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির খড়িয়াহাট গ্রাম থেকে গত বুধবার পাঁচজনের একটি মৎস্যজীবী দল নৌকা নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিল।


গতকাল বিকেল চারটে নাগাদ সুন্দরবন বাগনা এলাকায় নৌকা রেখে মাছ ধরতে নামে ৩৬ বছরের অন্ন দাস। বাকি সঙ্গীরা নৌকাতেই ছিলেন। তখন ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিল, সে কারণে, সকলে নদীতে নামেননি। 


সঙ্গীরা জানান, হঠাৎ করে জঙ্গলের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে রয়্যাল বেঙ্গল। জলে লাফ দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্ন দাসের উপর। অন্ন দাসের সঙ্গী সাধু মালি সহ বাকিরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘের ওপর লাঠি দিয়ে আঘাত ও চিৎকার শুরু করলে অন্ন দাসকে ছেড়ে পালিয়ে যায় বাঘটি। 


সঙ্গীরা তাঁকে জল থেকে নৌকায় তুলে দেখেন ততক্ষণে অন্ন দাসের মৃত্যু হয়েছে। অন্ন দাসের বাড়ি সন্দেশখালি বয়ারমারি ১-নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িয়াহাট গ্রামে। 


পুলিশ ও বন দফতর মৃতদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমর জন্য পাঠিয়েছে। সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাত বলেন, সরকারি সাহায্য যাতে পায় পরিবার, সেই ব্যবস্থা তিনি করবেন। 


এর আগে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে, সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে নদী পেরিয়ে এদিন ভোরে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের ৪ নম্বর সামশেরনগরে ঢুকে পড়েছিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।


একটি গেস্ট হাউসের পাশে রয়্যাল বেঙ্গলটিকে বসে থাকতে দেখে আতঙ্ক ছড়ায়। প্রায় ৪০ মিনিট গ্রামে ঘুরে বেড়ায় বাঘটি। শেষে গ্রামবাসীরা লাঠি নিয়ে তাড়া করায়, পিছু হঠে হলুদ-কালো ডোরাকাটা। নদী পার হয়ে ফের ঢুকে পড়ে জঙ্গলের আস্তানায়।


এই গ্রামেই গতবছর ঢুকেছিল বাঘ। গৃহস্থের গরু, ছাগল তুলে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। বাঘের হানা আটকাতে নদী ও জঙ্গলের সীমানায় নাইলনের নেট দিয়ে জাল তৈরি করে বন দফতর।


সেই জাল কয়েক জায়গায় ছিঁড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে বাঘটিকে ঢোকে বলে অনুমান করে এলাকাবাসীরা।