সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: রাজ্য সরকারের পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তার উদ্বোধন করতে গিয়ে দলের কর্মীদেরই একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। কোনও মতে রাস্তা উদ্বোধন করেই ফিরতে হল তাঁকে।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছল যে বিক্ষোভ সামাল দিতে না পেরে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে এলাকা ছাড়তে হল তৃণমূল বিধায়ককে। তৃণমূলের মধ্যে থেকেই উঠতে শোনা গিয়েছে 'বিজেপি' 'বিজেপি' রবও। বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনার সাক্ষী হল, উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার শালিপুর এলাকা।
বৃহস্পতিবার শালিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খলিসাদি মন্দির মোড় থেকে তালবেড়িয়া ব্রিজ পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ পিচ রাস্তার উদ্বোধন হবে পথশ্রী রাস্তাশ্রী প্রকল্পে। একথা জানিয়ে ফ্লেক্স দেওয়া হয় এলাকায়। উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর নাম ছিল ফ্লেক্সে। বিধায়ক এলাকায় পৌঁছতেই শুরু হয় তৃণমূলের একাংশের বিক্ষোভ। বিক্ষোভের মুখে পড়ে কোনও রকমে রাস্তা উদ্বোধন সেরেই এলাকা ছাড়েন বিধায়ক।
কী অভিযোগ:
স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পের উদ্বোধন করার পরেও, শুধুমাত্র সুবিধাবাদী রাজনীতির স্বার্থে আবার উদ্বোধনের অনুষ্ঠান করা হয়েছে। আর তা নিয়েই গন্ডগোল। হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল কর্মী বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী সূচনা করে দিয়েছেন। তারপর দেখলাম, হাড়োয়ায় রাস্তা উদ্বোধনের প্রোগ্রাম। আমরা জানতে যাই। জানতে গেলে, সেখানে হঠাৎ করে কয়েকজন নেতা এঁরা আমাদের বিজেপি আখ্যা দেয়। তাঁদের সঙ্গীরা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিধায়ক সদুত্তর দিতে না পেরে পালিয়ে গেলেন। যাঁরা তৃণমূলের নামে করেকম্মে খাচ্ছে, তাঁদেরই চক্রান্ত।' এখানেই শেষ নয়, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের পুরো অন্ধকারে রেখে পুরো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
শালিপুর অঞ্চলের যুব তৃণমূল কর্মী মহম্মদ মোক্তার মোল্লা বলেন, 'এখানে আমাদের কাউকে দেখতে পেলাম না। জিজ্ঞেস করায় আমাদের বিজেপি বলছে। অথচ আমরা এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। বিধায়ক জবাব দিতে না পেরে পালাল।'
ঘটনা সামনে আসতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নানা জেলায় প্রকাশ্যে আসছে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব। কখনও কমিটি তৈরি নিয়ে, কখনও আরও নানা কারণে। এসব তৃণমূল কীভাবে সামলাবে তা নিয়ে প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।'