সমীরণ পাল, বারাসাত: মামার শ্রাদ্ধতে গিয়ে, আর ফেরা হল না কিশোরের। বন্ধুদের সঙ্গে আম কুড়োতে গিয়ে, বাগানের পাহারাদারের হাতে মার খেয়ে নাবালকের মৃত্যুর অভিযোগ। উত্তেজনা উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) কাঁচরাপাড়ায়। প্রতিবাদে স্থানীয়দের একাংশ আমবাগানের একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এলাকায় বসেছে পুলিশ পিকেট।
ফেরা হল না কিশোরের: সামান্য আম পাড়ার সন্দেহে এক কিশোরকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ। উত্তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়া। মৃতের নাম, সুদীপ্ত পণ্ডিত (১৭) বাড়ি, কাঁচরাপাড়ার বাসন্তীতলায়। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেলে। স্থানীয় সূত্রে খবর, নৈহাটি শিবদাসপুর থানার আটিসাড়া গ্রামে কিশোরের মামাবাড়ি। মামা মারা যাওয়ায় তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যায় ওই কিশোর। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা রবি ঘোষের বাগানে আম কুড়াতে যায় সে। আম পেড়েছে এই সন্দেহে বাগানের পাহারাদার ফারহাদ মণ্ডল ওরফে ফুরাদ সুদীপ্তকে ধরে মারধর করেন। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় বাসিন্দা মঞ্জু ঘোষ বলেন, "আম কি জীবনে হবে না? না আম পাবে না? যে করেছে, তার শাস্তি চাই। তাকেও আমের মতো পেড়ে ফেলতে হবে।''কিশোরকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগে, শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বাগানে আমের গুদামে। অবরোধ করা হয় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়। ঘটনাস্থলে আসেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর। তিনি বলেন, "ওখানে একটা বাগান আছে, আম পাড়তে গিয়েছিল, আম মালিক দেখে তাড়া করে। যে ছেলেটি মারা গেছে, রাস্তার ধারে তাকে ধরে পেটায়। যখন জানাজানি হয়েছে, লোকজন ওখানে গিয়েছে, ছেলেকে অজ্ঞান পেয়েছে। তারপর মারা গিয়েছে।'' অভিযুক্ত ফারহাদ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে শিবদাসপুর থানার পুলিশ।
এই বিষয়ে বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি ভয়, পশ্চিমবাংলার সাধারণ মানুষের যে নেই, এটা প্রমাণিত হয়েছে। পশ্চিবাংলার পুলিশ-প্রশাসন শুধু তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।'' নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক সনৎ দে বলেন, "একটা আম পাড়ুক, ২টো আম পেড়েছে, তার জন্য পিটিয়ে মেরে দিতে হবে, এই ঘটনাকে নিন্দা করার ভাষা নেই। আমরাও ছোট ছিলাম, বাগান দেখে ইট মেরে আমও পেড়েছি। তাকে কেন্দ্র করে ছেলেটাকে মেরে দিতে হবে, এরকম অমানুষ থাকার চেয়ে না থাকা ভাল।''