সমীরণ পাল, অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ঠাকুরনগরে, শান্তনু ঠাকুরের ডাকে সিএএ (CAA) সমাবেশে ছিল, সেখানে আমন্ত্রণ পাননি। সেই একই সভামঞ্চে পাল্টা সভায় সিএএ ইস্যুতে বার্তা দিলেন, বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক ও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি। নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে।


একই ইস্যু আলাদা নেতা: 
শনিবার ঠাকুরনগরে সিএএ সমাবেশে আমন্ত্রিত ছিলেন না বিধায়ক ও জেলা সভাপতি। একই মঞ্চে একই ইস্যুতে একই রাজনৈতিক দলের ডাকে রবিবার সভা হয়। তবে বদলে যায় নেতার নাম। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে, সিএএ ইস্যুতে সভা করেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। সেই সভায় বিরোধী দলনেতা উপস্থিত থাকলেও আমন্ত্রণ পাননি বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার ও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি রামপদ দাস। রবিবার সেই একই মঞ্চে সভা করেন তাঁরা। তবে সেটা ছিল অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান। ওই সভায় বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার বলেন, 'কে আন্দোলন করল, সেটা বড় কথা নয়। সিএএ-টা লাগু করতে চাই। কাল ডাকা হয়নি। ২০১৪ সালে তখন মোদি আসে, তখন আমরাই সিএএ-র কথা বলি।আগে ওই পরিবার তৃণমূল করত। পরে বিজেপিতে যোগ দিয়ে সরব হয়েছে।'


শান্তনু ঠাকুরের তোপ:
এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেছিলেন, 'খুব শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গ-সহ (west bengal) সারা দেশে সিএএ (CAA) কার্যকর (imply) হবে। কেউ আটকাতে পারবে না।'  তিনি আরও বলেছিলেন,  'কারও নাগরিকত্ব (citizenship) কেড়ে নেওয়ার জন্য এই আইন (Law) নয়।' এর আগেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বলবৎ করার দাবিতে সুর চড়াতে শোনা গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে। 


তৃণমূলের কটাক্ষ:
মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'সিএএ হবে না। কারণ কোনও দরকার নেই। আমরা সবাই নাগরিক। কে আমাকে সার্টিফিকেট দেবে? মোদি? অমিত শাহ? ওদের কাছে আছে? ওদের নামও ভোটার লিস্টে আছে। আমারও আছে। ভোটের আগে আমাকে ললিপপ দেখাচ্ছ?'


২০১৯-এর লোকসভা থেকে ২০২১-এর বিধানসভা। বারবার বিজেপির প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার ছিল সিএএ ইস্যু। তার ফলও ভোটবাক্সে পেয়েছে পদ্ম শিবির। দুই ২৪ পরগনা থেকে নদিয়া, এই এলাকায় বিপুল মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক ব্যালট বক্সে ঢেলে সমর্থন জানিয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। আগামী লোকসভা ভোটের আগে বড় ভোট পঞ্চায়েত স্তরে। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হবে। তার আগে ফের সামনে আসছে সিএএ ইস্যু। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসে প্রত্যেকের মুখে শোনা গেছে সিএএ নিয়ে আশ্বাস।


এবার এই ইস্যুর প্রচার নিয়ে বিজেপির অন্দরের ফাটলও প্রকাশ্যে চলে এসেছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে কি সেটা মতুয়া-ব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলবে? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য-রাজনীতিতে।


আরও পড়ুন: 'কেউ বলছেন দিদিকে ধরে উনি তৃণমূলে আসার চেষ্টা করেছেন', মিঠুনকে নিশানা শত্রুঘ্নর