সমীরণ পাল, জয়দীপ হালদার, সন্দেশখালি: নিম্নচাপের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে ভিজছে গোটা রাজ্য। সেই আবহেই হানা দিল টর্নেডো (Tornado)। মাত্র ২০ সেকেন্ডের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির একাধিক গ্রাম (Sandeshkhali Tornado)। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (North 24 Parganas News) সমুদ্র থেকে ফেরার পথে উল্টে গেল ট্রলার। উদ্ধার ১৩ জন মৎস্যজীবী। নিখোঁজ কয়েকজন।


টর্নেডো আছড়ে পড়ে কয়েক সেকেন্ডে তছনছ সন্দেশখালির একাধিক গ্রাম


টর্নেডোর হানার পর সবুজ পাতায় ভরা একটা বিশাল গাছ উপড়ে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে এলাকায়। পাকা বাড়ির মাথার ওপর থেকে উড়ে গিয়েছে অ্যাসবেসটসের চাল। আর কাঁচা বাড়ির তো কথাই নেই। একেবারে ধূলিসাৎ। খড়ের গাদার মধ্যে মিশে গিয়েছে কাঁচা বাড়ি, ছড়িয়ে পড়ে চাঁচের বেড়া। তিলে তিলে সাজানো কষ্টের সংসার এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। চারদিকে সব তছনছ। বৃষ্টির মরসুমে টর্নেডোর হানায় মাথার উপর থেকে আশ্রয় চলে যাওয়ায় অথৈ জলে বহু পরিবার। 


উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০ সেকেন্ডের টর্নেডোয় লন্ডভন্ড সন্দেশখালির সরবেড়িয়া আগারাটি গ্রামপঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুর ১টা বেজে ৫-১০মিনিট নাগাদ শুরু হয় দুর্যোগ। মুহূর্তের ঝড়েই সব ওলটপালট হয়ে যায়। সরবেড়িয়া আগারাটি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান শেখ শাহজাহান বলেন, ‘‘১৫ থেকে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে তছনছ কয়েকশো বাড়ি। বাসস্থান বলে আর কিছু নেই। মাটির বাড়ি, অ্যাসবেস্টসের বাড়ি বলে আর কিছু নেই। বিডিও-কে জানিয়েছি। থাকার ব্যবস্থা করেছি। বাসস্থানের ব্যবস্থা না করলে সমস্যা।’’ বাড়ি ভাঙার পাশাপাশি উপড়ে পড়েছে বড় বড় গাছ। নিম্নচাপের মধ্যে মাথার ওপর থেকে ছাদ হারানো পরিবারগুলিকে অন্যত্র সরানোর কাজ চলছে।


আরও পড়ুন: Anubrata Mandal Arrested: কোনও বেনামি সম্পত্তি নেই, তদন্তে ১০০% সহযোগিতা, যাবতীয় অভিযোগ খারিজ অনুব্রতর


অন্য দিকে, ট্রলারডুবির ঘটনায় চরম উৎকণ্ঠা কাকদ্বীপে। উদ্ধার ১৩ জন মৎস্যজীবী। নিখোঁজ কয়েকজন। কাকদ্বীপ  মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে খবর,   গত মঙ্গলবার কাকদ্বীপ মৎস্যবন্দর থেকে বঙ্গোপসাগরের গভীরে মাছ ধরতে গিয়েছিল FB সত্যনারায়ণ নামের একটি ট্রলার। নিম্নচাপের প্রভাবে খারাপ আবহাওয়ার সতর্ক বার্তা পেয়ে তা ফিরছিল।


কাকদ্বীপে উল্টে গেল ট্রলার


ফেরার পথে কেঁদো দ্বীপের কাছে ডোবা চরে ধাক্কা খেয়ে ট্রলারটি উল্টে যায়। ট্রলারে থাকা ১৮ জন মৎস্যজীবীর মধ্যে বেশিরভাগকে উদ্ধার করা হলেও এখনও নিখোঁজ কয়েকজন। তাঁদের সন্ধান পেতে উপকূলরক্ষী বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।  কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘১৬ অগাস্ট গিয়েছিল। ফেরার পথে উল্টে যায়।’’ খারাপ আবহাওয়ার সতর্কতা পেয়ে ইতিমধ্যেই বহু ট্রলার সাগর থেকে ফিরে এসেছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৎস্যজীবীদের আগেও বলা হয়েছিল। আবার বলা হচ্ছে, ২০ তারিখ পর্যন্ত কেউ মাছ ধরতে যাবেন না।’’ শুক্রবার সাগর ব্লকের ধবলাট , বোটখালি ও শিবপুরে নদীবাঁধ পরিদর্শন করেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা।