আবির দত্ত, মিরিক : এমন ভয়াল রূপ প্রকৃতির ! স্মরণাতীত কালে দেখেনি মিরিকবাসী। বলছেন ঘরহারানো-ছাদহারানো মানুষগুলো। পর্যটনের ভরা মরসুমে তছনছ সবকিছু। আবার কবে সেরে উঠবে পাহাড়, ভেবে কুল পাচ্ছেন না কেউ। বরং মাথার উপর খাড়ার মতো ঝুলে রয়েছে আবহাওয়া দফতরের আরও বিপর্যয়ের পূর্বাভাস। 

Continues below advertisement

একের পর এক মৃত্যু সংবাদ

বৃষ্টি-ধসে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ পরিস্থিতি মিরিক জুড়ে। উত্তরবঙ্গে প্রকৃতির আঘাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৪। আহত ৫৬ জন। বহু মানুষে এখনও কোনও খোঁজ নেই । মিরিকে একের পর এক মৃত্যু সংবাদ আসছে। আর কত মানুষ ঘরে ফিরবে না কে জানে !

Continues below advertisement

ফুঁসছে বালাসন নদী

প্রবল জলের তোড়ে ভেঙে চুরমার দুধিয়া সেতু। মিরিকের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম পানিঘাটা সেতুতে আশ্রয় নিয়েছেন ধসে বিপর্যস্ত বহু মানুষ। ঘর আর নেই। হারিয়েছেন গেরস্থালির সবটুকু। এথন শুধু চেষ্টা প্রাণরক্ষার। তাও যেন পদ্মপাতায় জল। সেতুর নীচে ফুঁসছে বালাসন নদী। জলের তোড়ে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

'বাড়িটাই না থাকলে, থাকব কীভাবে '

ভয়ঙ্কর অবস্থায় রয়েছে এলাকার মোবাইল টাওয়ারটি। স্তম্ভের নীচে মাটি গিয়েছে ধসে।  যে কোনও মুহূর্তে উপড়ে যেতে পারে  টাওয়ারটিও। ভয়াবহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা। 'যা রোজগার করেছি এই বাড়িতেই লাগিয়েছি। এখন এই বাড়িটাই না থাকলে, থাকব কীভাবে আপনারাই বলুন। ' বলছেন চরম অনিশ্চয়তার দিন কাটানো দুধিয়ার বাসিন্দা মালা রাওয়াত। 

 ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ

এদিকে এরই মধ্যে ত্রাণ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ধ্বংসের এমন মারাত্মক ছবি আগে কখনও দেখা যায়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রবল ক্ষোভ রয়েছে এলাকাবাসীর। কারও কারও মতে, ভোট এলেই নেতাদের ছোটাছুটি পড়ে যায়। এমন বিপর্যয়ের দিনে কারও দেখা নেই।  

আটকে  কলকাতার পর্যটক  

মিরিকে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বাঙালি পর্যটকরা। যাদবপুুরের বাসিন্দা জন্টি রায় বর্মন, তপোব্রত মণ্ডল। পঞ্চমীর দিন বাইক নিয়ে পাহাড়ে ঘুরতে আসেন তাঁরা। শনিবার মিরিকে এসে আটকে পড়েছেন। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।ভয়াবহ পরিস্থিতি। প্রশাসনের সহযোগিতায় কোনওমতে বাড়ি ফিরতে চাইছেন যাদবপুরের বাসিন্দারা। 

শিলিগুড়ি দার্জিলিংয়ের রাস্তা বন্ধ

ধস নেমেছে কার্শিয়ঙের গৌরিশঙ্কর চা বাগানের কাছে রোহিনী রোডে। দুর্ঘটনা এড়াতে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার এই রাস্তায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কার্শিয়ঙের হুইসলখোলার কাছে ১১০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর পাথরের চাঁই পড়ে বন্ধ হয়ে যায় রাস্তা।