সনৎ ঝা , বাচ্চু দাস, কলকাতা : আর জি কর-কাণ্ডের আবহে থ্রেট কালচারের অভিযোগ উঠেছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও। আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের তীব্র বিক্ষোভের জেরে পদত্যাগও করেছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়াল কলেজের ডিন এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিন। এবার অভিযুক্ত আধিকারিক, হাউস স্টাফ ও ইন্টার্ন সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে একাধিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করল মেডিক্য়াল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে পদত্যাগী ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত, পদত্যাগী অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিন সুদীপ্ত শীল, এবং নিউরো মেডিসিন বিভাগের রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার (RMO) নীলাব্জ ঘোষকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনে।


গত ৪ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের পর আন্দোলনকারীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গড়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সোমবার এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয় সেই কমিটি। তার ভিত্তিতে তিনজন হাউসস্টাফ শাহিন সরকার, সাহিনুল ইসলাম এবং ঋতুরম্ভ সরকারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে তাঁদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশও করা হয়েছে।  একইসঙ্গে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ইন্টার্ন সোহম মণ্ডলের রেজিস্ট্রেশন।

এছাড়াও কলেজের প্রথম বর্ষের তিনজন পড়ুয়া জয় লাকড়া, ঐশী চক্রবর্তী, সৃজা কর্মকার এবং দ্বিতীয় বর্ষের দুই ছাত্র তীর্থঙ্কর রায় এবং অরিত্র রায়কে উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়াল কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার সাহারিয়া আলম জানালেন, 'কলেজ কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। কিন্তু এখনও অনেকে আছে। বিভিন্নভাবে থ্রেট দিচ্ছে। আমরা বলতে চাই এদেরকেও ছাড়া হবে না। তারা যদি ফের এসব করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টিএমসিপি ইউনিটকে আমাদের জীবন থেকে ত্যাগ করতে হবে।'

শাহিন সরকারের বিরুদ্ধেই পড়ুয়াদের হুমকি এমনকী ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তা শুনে গর্জে উঠেছিলেন কলেজের নেফ্রলজি বিভাগের অধ্যাপিকা অর্পিতা রায় চৌধুরী। ' রেপ থ্রেট দিয়েছে। এই মেয়েটির মৃত্যুর পরেও এটা আমায় কান দিয়ে শুনতে হল। শাহিন সরকার কে, আমি জানি না। এই কলেজের। টিএমসিপি-র ছেলে। এখানকার। ' 


আন্দোলনকারীদের তরফে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাতে নাম রয়েছে খোদ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহারও। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, খোদ অধ্য়ক্ষই জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নথি ও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট
স্বাস্থ্য় শিক্ষা অধিকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন : 'থ্রেট কালচার চলবে না', ৫১ জনের ঢোকা বন্ধ হল আরজি করে !