সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: উত্তর দিনাজপুরে, সমবায় সমিতির নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস ও বিজেপি সমর্থিত ঐক্য় মঞ্চের জয়জয়কার। ৯টি আসনের সবকটিতে জয়ী হলেন বিরোধী প্রার্থীরা। ধরাশায়ী তৃণমূল। একটিও আসন পায়নি তারা। কদিন আগেই সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে, তৃণমূলকে হারিয়েছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। সম্প্রতি, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখে শোনা গেছে তৃণমূল-বিরোধী মহাজোটের ডাক। একই সুরে কথা বলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরইমধ্য়ে এবার, উত্তর দিনাজপুরে, সমবায় সমিতির ভোটে, তৃণমূলকে পরাজিত করল বিরোধী-ঐক্য় মঞ্চ। ইটাহার থানা প্রাইমারি টিচার্স কো অপারেটিভ লিমিটেডের ভোটে শাসকদলকে কার্যত ধরাশায়ী করে দিল, বাম-কংগ্রেস ও বিজেপি সমর্থিত প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য় মঞ্চ।
রবিবার, ছিল ভোটগ্রহণ। এদিনই ফল ঘোষণা হয়। তাতে দেখা যায়, ৯ টি আসনের মধ্যে সবগুলোতেই জয়ী হয়েছে বিরোধীদের ঐক্য় মঞ্চ। একটিতেও জিততে পারেনি তৃণমূল। বঙ্গীয় নব উন্মেষ প্রাথমিক শিক্ষক সঙ্ঘের সম্পাদক এবং বিজেপি নেতা শুভময় রায় বলেন, 'দুর্নীতিকে পরাস্ত করে। বঞ্চনা, ৩৬ পারসেন্ট বঞ্চনা। সমস্ত শিক্ষক ঐক্য়বদ্ধ হয়ে এটা করেছে। এতেই আমাদের জয়।' বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের নেতা অজয় চক্রবর্তী বলেন, '৯-০ তে জিতেছি। প্রাথমিক শিক্ষকদের ঐক্য়।'
ধরাশায়ী তৃণমূল:
এদিন মোট ভোটারের সংখ্য়া ছিল ৪৪১ জন। কিন্তু শাসকের ঝুলি ছিল প্রায় শূন্য়। তৃণমূলের শিক্ষক সেলের নেতা গৌরাঙ্গ চৌহান বলেন, 'কো অপারেটিভ ৪০-৫০ বছর আগে তৈরি। ওতে আমাদের ১০ শতাংশ মেম্বার নেই। ওরা ২ শতাংশ বেশি ধরে লোন দেয়। তবুও আমাদের টিচাররা লড়েছে।' তবে, এই নির্বাচনেও পিছু ছাড়েনি অশান্তি। বিরোধীদের অভিযোগ, ব্য়ালট বক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। এনিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগেও বেশ কিছু সমবায় সমিতির নির্বাচনে জয় পেয়েছে বিরোধী মঞ্চ, আরও নিখুঁত ভাবে বলতে গেলে বাম-কংগ্রেস। বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে হলদিয়া ডক ইনস্টিটিউট ভোটে ধরাশায়ী তৃণমূল। ১৯টি আসনের মধ্যে ১৯টিতেই জয়ী বাম-কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থী। হলদিয়া ডক ইনস্টিটিউট ভোটে খাতাই খুলতে পারেনি তৃণমূল, বিজেপি। ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ডক ইন্সটিটিউট দখলে ছিল আইএনটিটিইউসির। ১৯ আসনের হলদিয়া ডক ইন্সস্টিটিউটের পরিচালন সমিতি নির্বাচনে, সবকটি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি (INTTUC)। প্রার্থী দিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (BMS)। কিন্তু, একটি আসনেও খাতা খুলতে পারেনি তারা। এর আগে কোলাঘাটেও তৃণমূলকে হারিয়ে জয়ের মুখ দেখেছিল বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: BSF-র বিরুদ্ধে যুবককে 'পিটিয়ে খুনের' অভিযোগ কোচবিহারে