সুদীপ চক্রবর্তী,  উত্তর দিনাজপুর : প্রথম  লকডাউন (lockdown) দেখেছিল দেশ জুড়ে এক ভয়াবহ ছবি। আসমুদ্র হিমাচলে যখন লকডাউন জারি ছিল, তখন পায়ে পায়ে রাজপথ ধরে হেঁটে চলেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। কর্মহারা। গৃহহারা। ঘরে ফেরার দায়ে। পেটের দায়ে। পথেই বহু মানুষের গিয়েছিল প্রাণ ! লকডাউন কাজ হারিয়েছিলেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক! তারপর রাজ্যে রাজ্যে দেখা গিয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের হাজার হাজার কিলোমিটার সাইকেলে কিংবা হেঁটে ঘরে ফেরার ভয়ঙ্কর ছবি! কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে অনেকেই ঢলে পড়েছিলে মৃত্যুর কোলে। কারও প্রাণ গেছিল ট্রেনের চাকায়। কেউ আবার হাইওয়ে ধরে আসার সময় গাড়ির ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছিলেন!



সেই স্মৃতি এখনও টাটকা। সেই স্মৃতি যেন আবারও না ফিরে আসে। আতঙ্কে  এরইমধ্যে ফের একবার দেশজুড়ে করোনা (Coronavirus) ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতেই, আগেভাগেই ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) বাহিন গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিকরা।  দিল্লি, মুম্বই, জয়পুর, পাঞ্জাব, হায়দরাবাদ, চেন্নাই সহ বিভিন্ন জায়গায় কাজে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, আতঙ্ক-উদ্বেগের জেরে ঘরে তো ফিরলেন, এবার পেট চালাবেন কী করে? সেই দুশ্চিন্তা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোকে!

আরও পড়ুন : দেশে করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়ল ১০ শতাংশের বেশি 


নৌশাদ আলি, নাজিমুদ্দিন মহম্মদের মুখে এখন চিন্তার কালো মেঘ। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত। পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপি।  


পঞ্চায়েত সদস্য সইদুর রহমানের আশ্বাস, 'হাজার মানুষ বাইরে গেছে। বাড়ি ফিরছে। তাদের কাজের ব্যবস্থা করা হবে পঞ্চায়েতের তরফে।' কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের নেতা বিশ্বজিৎ লাহিড়ি জানান, ' রাজ্যে এই সরকার থাকলে ভোগান্তি থাকবে। কর্মসংস্থান নেই তাই ভিন রাজ্যে যেতে হয়। ' 


পঞ্চায়েতের তরফে আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু, কাজ মিলবে তো? পেটের ভাত জোগাড় হবে তো? এই চিন্তাই এখন ঘুম কেড়েছে ঘরেফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের।