উত্তর দিনাজপুর: সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) পাঞ্জিপাড়ার পঞ্চায়েত প্রধানকে গুলি করে খুন করা হয়। তা নিয়ে তদন্তে এবার উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইসলামপুর পুলিশ জেলার এসপি-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জমি মাফিয়াদের বাধা দেওয়াতেই খুন পাঞ্জিপাড়ার পঞ্চায়ত প্রধান। 


২০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয় পাঞ্জিপাড়ার (Panjipara) পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ রাহিকে। খুনের ৭ দিনের মাথায় শ্যুটার মহম্মদ আলি সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে একাধিক অস্ত্র। একটি সেভেন এমএম পিস্তল, বাজেয়াপ্ত ৩ রাউন্ড গুলিও। বিহারের কিষাণগঞ্জে তল্লাশি চালিয়ে একটি গাড়িও উদ্ধার করা হয়েছে। 


জমি-মাফিয়াদের বাধা দেওয়াতেই খুন হন উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান। তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, দাবি ইসলামপুর (Islampur) পুলিশ জেলার SP-র।  খুনের ৭ দিনের মাথায় গতকাল  বিহারের আরা থেকে শার্প শ্যুটার মহম্মদ আলি ও কিষাণগঞ্জ থেকে এক গাড়ি চালককে গ্রেফতার করেছে গোয়ালপোখর থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, তৃণমূল প্রধানকে খুনের পর এই গাড়িতে চড়ে পালানোর পরিকল্পনা ছিল আততায়ীদের। খুনের মাস্টারমাইন্ড মহম্মদ মুস্তাফা এখনও ফেরার। জেলা পুলিশ সুপার জানান, সুধা নদীর জমি বেআইনি ভাবে বিক্রির প্রতিবাদ করায় মহম্মদ রাহিকে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে আগেই কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর পুলিশ জেলা সুপার যশপ্রীত সিংহ বলেন, 'ল্যান্ড গ্র্যাবিংয়ের ও চেষ্টা করছিল। পাঞ্জিপাড়ার একজন নেতা হিসাবে মহম্মদ রাহি ওকে বাধা দেয়, প্রতিবাদ করে। যার ফলে ও প্ল্যানিং করে।'


রেষারেষি অনেকদিনের। শুধু সুযোগ খুঁজছিল খুনি। পঞ্চায়েত ভোটের উত্তেজনা একটু থিতিয়ে যেতেই নিখুঁত অপারেশন। উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ায়,আস্ত নদী ভরাটে বাধা দেওয়ার জেরেই খুন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ রাহি! শার্প শ্যুটার-সহ ২ জনকে গ্রেফতার করে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল জেলা পুলিশ।হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে উঠে এল বিহার কানেকশন। তদন্তে নেমে বিহারগামী রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে শার্প শ্যুটারদের বাইক এবং গাড়ি চিহ্নিত করে পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই মঙ্গলবার বিহারের আরা থেকে এক শার্প শ্য়ুটার এবং কিষাণগঞ্জ থেকে এক গাড়িচালককে পুলিশ গ্রেফতার করে।


উদ্ধার হয় সেভেন এমএম পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের জেরা করেই উঠে আসে। বাংলা-বিহার সীমানায় দাপিয়ে বেড়ানো জমি মাফিয়া মহম্মদ মোস্তাফার নাম। খুনের ঘটনায় আগেই কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ মোস্তাফাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই নামে জমি মাফিয়ার কথা উঠে আসায়, উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের প্রশ্ন, তবে কি জেনেবুঝে হত্যাকাণ্ডের মোড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে, তাদের পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করানো হয়েছে? 


যে জমি নিয়ে খুনোখুনির অভিযোগ, এবিপি আনন্দর ক্যামেরায় পাঞ্জিপাড়ায় সেই সুধা নদীর অবস্থা তুলে ধরেছে। নদীর অনেকটা অংশই মাটি ফেলে ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। তুলে দেওয়া হয়েছে পাঁচিল। অভিযোগ, জমি মাফিয়া মহম্মদ মোস্তাফার ইন্ধনেই এই কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। পুলিশ-প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। বিরোধীদের প্রশ্ন, শাসকদলের ইন্ধন না থাকলে কি এতটা বাড়তে পারত ওই জমি মাফিয়া?


আরও পড়ুন: সাগর দত্ত মেডিক্যালে 'দালাল-রাজ' নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে জমা পড়ল রিপোর্ট