সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: সাধক বামাক্ষাপার বংশধরেরা দীর্ঘদিন ধরে পুজো করে আসছেন রায়গঞ্জ আদি করুনাময়ী কালী মন্দিরে। এখানে তন্ত্রমতে পূজিতা হন দেবী। দূরদূরান্ত থেকে প্রতিবার ভক্তরা পুজো দিতে আসেন এই মন্দিরে।


বাতাসে ধূপের গন্ধ। কাঁসর-ঘণ্টার আওয়াজে মুখরিত আকাশ। দীপাবলির রাতে প্রতিবার হাতে পুজোর ডালি নিয়ে এই মন্দিরের সামনে লম্বা লাইন দেন ভক্তরা। রায়গঞ্জের বিখ্যাত ‘বন্দর আদি করুণাময়ী কালীবাড়ি’তে প্রতিবছর ধূমধাম করে শক্তির আরাধনা করেন সাধক বামাখ্যাপার বংশধরেরা। 


কথিত আছে প্রায় পাঁচশো বছর আগে পাঞ্জাব প্রদেশের এক সাধু পায়ে হেঁটে এসে উপস্থিত হন রায়গঞ্জের কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে। ঘাটের কাছেই একটি গাছের তলায় ধ্যান করে সিদ্ধিলাভ করেন। সেই থেকে এখানে শুরু হয় কালীর আরাধনা। 


১২১৬ বঙ্গাব্দে দিনাজপুরের রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই স্থানে নির্মাণ করেন কালী মন্দির। এরপর তারাপীঠের মহাসাধক বামাখ্যাপার বংশধর জানকিনাথ চট্টোপাধ্যায় বারাণসী থেকে কষ্টিপাথরের কালীমূর্তি এনে বসান পঞ্চমুণ্ডী আসনে। সেই থেকেই ওই মূর্তির পুজো হয়ে আসছে ‘বন্দর আদি করুনাময়ী কালীবাড়ি’তে। 


এখানে তন্ত্রমতে পূজিতা হন দেবী। সারা বছরই অসংখ্য ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দিরে। 


সাধক বামাক্ষাপার বংশধর মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় বলছেন, এই মন্দিরে কালীপুজোর রাতে মায়ের পায়ের নূপুরের ধ্বনি শোনা যায়। তন্ত্রমতে এখানে দেবী পূজিতা হন। মাছ ভোগ দেওয়ার পাশাপাশি ছাগ বলির প্রচলন রয়েছে বন্দর আদি করুনাময়ী কালীবাড়িতে। পুজোর বর্ণনা দিয়েছেন। পুজোয় বলি প্রথার বিবরণ।


রায়গঞ্জের বাসিন্দা ভগবানপ্রসাদ সাহা বলছেন, 'আমরা ছোট থেকেই এই পুজো দেখে আসছি।  মা খুব জাগ্রত।' করোনাকালেও এই পুজোয় যথেষ্ট ভক্তসমাগমের আশা করছেন উদ্যোক্তারা। তাই সতর্কতা হিসাবে মন্দিরের প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে স্যানিটাইজার টানেল। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্কের ব্যবহার। 


আরও পড়ুন: Kalipuja 2021: কৈলাসে ফিরে গেছেন বড়দেবী! আসছেন বড় তারা, কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে চূড়ান্ত ব্যস্ততা