সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিজেপির মিছিল। তাকে কেন্দ্র করেই তীব্র উত্তেজনা ছড়াল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। বিজেপির মিছিলে দফায় দফায় বাধা দিল পুলিশ। বাধল ধস্তাধস্তি। মিছিলের অনুমতি ছিল না। পাল্টা দাবি রায়গঞ্জ থানার পুলিশের। ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
মিছিলে ঝামেলা পুলিশের সঙ্গে
রায়গঞ্জ শহরে বিজেপির মিছিল ঘিরে ব্যাপক ঝামেলা। পুলিশের সঙ্গে চলছে ধস্তাধস্তি। সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করে বিজেপি। কিন্তু প্রতিনিয়ত বাধা দিতে থাকে পুলিশ। এসএসসি-টেটকাণ্ডে রাজ্যজুড়ে হইচইয়ের মধ্যেই, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে স্বজনপোষণ, ক্যাম্পাসের সম্প্রসারণে দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সেই ইস্যুতেই এদিন বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় বিজেপি। রায়গঞ্জ থানার পুলিশের দাবি, মিছিলের জন্য গেরুয়া শিবির কোনও অনুমতি নেয়নি। বেলা ১টার সময় রায়গঞ্জে জেলা কার্যালয় থেকে বিজেপির মিছিল শুরু হয়। কিছুদূর এগোতেই বিদ্রোহী মোড়ে মিছিল আটকায় পুলিশ।
এরপরই বেধে যায় তুলকালাম। রাস্তায় বসে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে যান রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। তিনি মিছিল নিয়ে এগনোর চেষ্টা করতে, ফের বাধা দেয় পুলিশ। ফের শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। পুলিশকে কার্যত ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান বিজেপি সাংসদ।
শেষ পর্যন্ত মিছিল পৌঁছয় রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে। সেখানে পথসভা করে তৃণমূলকে নিশানা করেন বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। তিনি বলেন, ''বিশ্ববিদ্যালয় দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলন চলবেই, পুলিশ বাধা দিয়ে লাভ হবে না।''
বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল পাল্টা নিশানা করে বিজেপিকে। জেলার তৃণমূল নেতা অরিন্দম সরকার বলেন, ''বিজেপি মিথ্যা কথা বলছে, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে নারদ, সারদার অভিযোগ আছে, কেউ ধরেছে? কী করছে সিবিআই-ইডি।''
এসএসসি ও টেটে নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় রাজনৈতিক চাপানউতোর চরমে। এবার রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগে তুঙ্গে বিজেপি-তৃণমূল তরজা।
এদিকে, এসএসসি (SSC) দুর্নীতি মামলায় শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ও অশোক সাহার সিবিআই (CBI) হেফাজত দেওয়া হয়েছে। ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সিবিআই হেফাজতে এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা। সিবিআই হেফাজতে এসএসসি-র প্রাক্তন সচিব অশোক সাহা।
আদালতের তরফে কী জানান হয়েছে?
- ‘তদন্তে সহযোগিতা করছেন না শান্তিপ্রসাদ, অশোক’
- ‘এসএসসি-দুর্নীতিতে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়েছে’
- ‘ষড়যন্ত্রে জড়িত বহু প্রভাবশালী’
আদালতে সিবিআই দাবি করে, SSC সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এই দু’জন গায়েব করেছেন। নেপথ্যে বড়সড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। তাতে আরও অনেক প্রভাবশালী জড়িত। অযোগ্য প্রার্থীদের সুপারিশ ও নিয়োগপত্র দিয়েছেন শান্তিপ্রসাদ-অশোক। সিবিআইয়ের দাবি, SSC-তে কতগুলি পদ খালি রয়েছে, তা ভুয়ো নামে তথ্যের অধিকার আইনে জেনে নিতেন ওই দুই প্রাক্তন কর্তা। সেই অনুযায়ী নিয়োগপত্র দেওয়া হত। আদালতে দাবি সিবিআইয়ের।
আরও পড়ুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবার মন্ত্রিসভার বৈঠক করতে হবে জেলে গিয়ে : দিলীপ ঘোষ