সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: স্কুলছুট সহপাঠীদের ফেরাতে এ বার পথে নামল পড়ুয়ারাই, অবশ্যই তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন শিক্ষকরাও। শনিবার উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার রামকৃষ্ণপুর পিডিজিএম হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা ক্লাস শেষে কয়েকটি গ্রাম ঘুরে স্কুলে ফেরার আবেদন জানায়। পড়ুয়াদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন স্থানীয় বিধায়কও। এদিন তিনি বলেন, ‘‘স্কুলছুটদের স্কুলমুখী করতে সহপাঠীদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’’
করোনা সংক্রমণের জেরে প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পর চারটি শ্রেণির জন্য স্কুল খুলেছে। কিন্ত শুরু থেকেই জেলার বেশ কিছু স্কুলে উপস্থিতির হার খুবই কম। স্কুল খোলার পর, মঙ্গলবার পড়ুয়াদের গরহাজিরা নিয়ে চিন্তা কাটেনি শিক্ষকদেরও। সেই তালিকায় রয়েছে চাকুলিয়া রামকৃষ্ণপুর পিডিজিএম হাই স্কুলও। ওই স্কুল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার নবম ও দশম শ্রেণি মিলে মোট ৩৫০ পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র ৮০ জন উপস্থিত ছিল। স্কুলছুটদের ফেরাতে এ দিন শিক্ষকেরা ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে পড়ুয়াদের দুয়ারে দুয়ারে। করোনার জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের একাংশ বিভিন্ন কাজে লেগে পড়েছে। কেউ আবার রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ে, কেউ ভিন্ রাজ্যে কাজে চলে গিয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকি দত্ত বলেন, ‘‘যারা কাজ করছে, আসছে না তাদের স্কুলে পড়ুয়ারাই সহপাঠীদের এমন উদ্যোগ নিয়েছে।’’
এর আগে বর্ধমানেও ধরা পড়েছে সেই ছবি। সপ্তাহখানেক হতে চলল স্কুল খুলেছে তবুও ক্লাসগুলোতে ছাত্রের সংখ্যা একেবারেই কম তাই ছাত্রদের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে মাইক নিয়ে পথে নামল শিক্ষকরা। স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে অভিনব এই উদ্যোগ। স্কুল সংলগ্ন এলাকায় মাইক নিয়ে অভিভাবকদের কাছে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠানোর অনুরোধ করছেন দাঁইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ অন্য শিক্ষকরা। মাইক হাতে শিক্ষকরা আজ সকাল থেকে রাস্তায় নেমে দাঁইহাট শহরের পাইকপাড়া, মজিদপাড়া সহ বাজার এলাকায় প্রচার করলেন। প্রচারের ফাঁকে অভিভাবকদের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষকের দল পড়ুয়া কেন স্কুলে যাচ্ছে না তার খোঁজ খবর নিলেন।
করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে দেড় বছর পর সরকারি নির্দেশে স্কুল খুললেও পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার খুবই কম। দশ দিন হয়ে গেলেও পড়ুয়ারা স্কুলে আসছে না। স্কুলে ছাত্র ফেরাতে প্রধান শিক্ষক মনোহর দাস এলাকায় মাইক নিয়ে প্রচারের পরিকল্পনা করেন। সার্ধশতবর্ষ পার করা কাটোয়া মহকুমার দাঁইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের জনা দশেক শিক্ষক আজ দুপুর থেকে এলাকায় মাইক হাতে প্রচার শুরু করেন।দাঁইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা ১৪৯৫ জন।