ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও নান্টু পাল, বীরভূম: তৃণমূলের নেতারা (TMC Leaders) একের পর এক দুর্নীতিতে (corruption) জড়াচ্ছেন। তাই তৃণমূলের পাশে, নয় রয়েছেন বিজেপিতেই, স্পষ্ট করে জানালেন বগটুুইয়ের স্বজনহারা মিহিলাল শেখ (Mihilal Sheikh)। রবিবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে মন কি বাত অনুষ্ঠান শোনাল বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। সরকারি সুযোগ-সুবিধা, চাকরি নেওয়ার পরও অবস্থান বদল কেন? প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। 


বগটুইয়ের 'মন কি বাত'


মঙ্গলবার বগটুইয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন বিধায়ক। সেদিনই শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলে দেখা যায় মিহিলাল শেখকে। এরপর শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর বগটুই-বার্তা, রবিবার মিহিলালের বাড়িতে 'মন কি বাত'। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বগটুইয়ে রাজনীতির আঁচ আরও বাড়ছে।

মঙ্গলবার বগটুইয়ে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডের বর্ষপূর্তিতে এক স্বজনহারার বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূল বিধায়ক। সেদিনই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মিছিলে হাঁটতে দেখা যায় স্বজনহারা মিহিলাল শেখকে। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে, শুক্রবার বীরভূম জেলার নেতাদের সামনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্ষেপ করে বলেন, 'বগটুইয়ের জন্য কী করিনি। ওদের চাকরি দিয়েছি। ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। সামাজিক প্রকল্পগুলোতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ দিয়েছি। তারপরেও ওদের কয়েকজন অন্য দলের সঙ্গে চলছে।'


এই আবহে এবার মিহিলাল শেখের বাড়িতে গিয়ে মোদির মন কি বাত শোনাল বিজেপি নেতৃত্ব। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে নারীশক্তির প্রসঙ্গ। এছাড়া অঙ্গদান নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন নরেন্দ্র মোদি। প্রিয়জনের মৃত্যুর পর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি।

বগটুইয়ের 'মন কি বাত' কী? কার পাশে বগটুই? অনুষ্ঠান শেষে 'মন কি বাত' স্পষ্ট করেন স্বজনহারা মিহিলাল শেখ। তাঁর কথায়, 'আমি বিজেপিতেই এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। এই সরকার যে রোজ রোজ এত দুর্নীতি বেরোচ্ছে, আমি তার পাশে নেই।'

শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা। বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, 'ও চাকরি নিতে পারে, সুযোগ নিতে পারে, এবার যদি এরকম করে কী বলার থাকতে পারে।' অন্যদিকে বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর দুধেল গাই হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল এদের। আজ ওদের পাশে এসে আমরা মন কি বাত শোনালাম।' 


গত বছর ২১ মার্চ সন্ধেয়, বগটুইয়ে খুন হন তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বগটুইয়ে সংগঠিত হয় ভয়ঙ্কর হত্যালীলা! ১০ জনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ৩ দিনের মাথায়, বগটুইয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উপস্থিতিতে নিহতদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় আর্থিক সাহায্য। এছাড়াও, মৃতদের পরিবার থেকে ১ জন করে সদস্যকে চাকরিও দেয় রাজ্য সরকার।


আরও পড়ুন: Purba Medinipur:পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার আগেই নন্দীগ্রামে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা বিজেপির


বগটুই হত্যাকাণ্ডে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগের নেপথ্যে উঠে আসে তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের তৎকালীন সভাপতি আনারুল হোসেনের নাম। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, আনারুলকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এত কিছুর পরও বগটুইয়ের অসন্তোষ কাটেনি। শেষমেশ কার পাশে থাকবে বগটুইয়ের স্বজনহারারা? পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই প্রশ্ন ঘিরেই তুঙ্গে চাপানউতোর।