সন্দীপ সরকার, কলকাতা: শহরের প্রথম সারির সরকারি মেডিক্যাল কলেজের তালিকায় রয়েছে এনআরএস। আর সেখানেই প্রকাশ্যে চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি। চরম সঙ্কটে ধুঁকছে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের (NRS Medical College) গ্যাসট্রোএন্টেরোলজি বিভাগ। এতদিন ২ জন চিকিত্সককে নিয়ে চলছিল। একজনকে বদলি করা হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে (Calcutta Medical College)।
এনআরএসের গ্যাসট্রোএন্টেরোলজি (Gastroenterology Department) বিভাগের একমাত্র চিকিত্সক স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁর একার পক্ষে এতজন রোগীর চিকিত্সা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। চিকিত্সক-সঙ্কটে বর্তমানে একদিন আউটডোর চলে। আউটডোরে দৈনিক ৬০০-র বেশি রোগী আসেন। এ ছাড়াও রয়েছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিত্সা। এই পরিস্থিতিতে কার্যত বন্ধ হওয়ার মুখে এনআরএসের গ্যাসট্রোএন্টেরোলজি বিভাগ। চরম দুর্ভোগে রোগীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
আরও পড়ুন: Municipal Election 2022 : শ্রীরামপুর ও দক্ষিণ দমদম, আজ রাজ্যের ২টি বুথে পুনর্নির্বাচন
উল্লেখ্য এর আগও একই ছবি দেখা সামনে আসে খাস কলকাতা মেডিক্যালেও। ধুঁকছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগ। সেখানে চিকিৎসক মাত্র ২ জন। অপারেশন করার পাশাপাশি তাঁদেরই সামলাতে হয় আউটডোর। সমস্যায় রোগী ও তাঁদের পরিজনরা। চিকিৎসক নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্যভবনের কাছে আবেদন করেছে কর্তৃপক্ষ। ভয়ঙ্কর করোনা আবহে বাড়ির ছোটদের নিয়েও যখন সবার দুশ্চিন্তা, তখন উদ্বেগের এক অন্য ছবি ধরা পড়ল খাস কলকাতায়। ১৯৪৬ সালে, ভারতের প্রথম পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগ চালু হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছে হাজার হাজার শিশুর ভরসা এই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। অবসর, বদলি-সহ বিভিন্ন কারণে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগে কমতে কমতে চিকিৎসকের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ২-এ। তাঁদের মধ্যে একজন বিভাগীয় প্রধান এবং অন্যজন রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার (RMO)। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু’জনকেই আউটডোরে বসতে হয়, সেই সঙ্গে করতে হয় অপারেশন। যেখানে একসময় ৬ দিন আউটডোর খোলা থাকত, সেখানে এখন খেলা থাকে ২ দিন। এক অসুস্থ শিশুর বাবা গোপাল রায় বলেন, এখন তো সোমবার ও বৃহস্পতিবার আউটডোর খোলে। আবার বৃহস্পতিবার আসতে হবে।
রোগীর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝে তো একজন চিকিৎসক আউটডোরে থাকলে, অপারেশন করার কেউ থাকে না। রোগীর আত্মীয় প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, "ডাক্তাররা বিরক্ত হয়ে পড়ছেন। ৫ জনের জায়গায় দুজন আছেন। একজনের জায়গায়২ জন আছে, একজনই আউটডোরে যাচ্ছেন, তিনিই অপারেশন করছেন।"