সুনীত হালদার, হাওড়া : হাওড়া থেকে বিশাখাপত্তনম যাওয়ার পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ওড়িশার গঞ্জামে (Ganjam-Kandhamal border in the Kalinga Valley ) পর্যটকদের বাস উল্টে মৃত্যু হয় উদয়নারায়ণপুরের ( Udayanarayanpur area ) বাসিন্দা ৬ পর্যটকের। বেড়ানোর আনন্দে মশগুল ছিলেন সকলে, কেউ ভাবতেও পারেননি, এভাবে ওত্‍ পেতে রয়েছে ভয়ঙ্কর বিপদ! হইহই করে বেড়াতে যাওয়া মানুষগুলো ঘরে ফিরল প্রাণহীন দেহ হয়ে। 
মৃত ৬ পর্যটকের কফিনবন্দি দেহ ফিরল হাওড়ায়। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ উদয়নারায়ণপুর বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছয় ৬ জনের মৃতদেহ। এরপর পাঁচজনের দেহ সুলতানপুর গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন গ্রামবাসীরা। সেখানেই শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সমীর পাঁজা-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। একজনের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় হুগলি জেলায়। প্রশাসনের তরফে আহতদেরও একটি বাসে করে ওড়িশা থেকে হাওড়ায় নিয়ে আসা হচ্ছে। 


ওড়িশা প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের তরফে যোগাযোগ করা হয়। যত দ্রুত সম্ভব মৃতদেহের ময়নাতদন্ত ও আহতদের চিকিত্‍সার পর, রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ওড়িশায় প্রতিনিধি দল পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, 'ওড়িশায় বাস দুর্ঘটনায় মৃত এবং আহতদের উদ্ধারের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একটা বাস ও দুটো অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। যে  ৬ জন মারা গিয়েছেন তাদের নিয়ে আসা হচ্ছে। ' 


ঘুমের মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা


গত সোমবার, উদয়নারায়ণপুরের সুলতানপুর গ্রাম থেকে ৭৭ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দেয় বাসটি।  গন্তব্য ছিল দক্ষিণ ভারত। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার মাঝরাতে, ওড়িশার দারিংবাড়ি থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে যাওয়ার পথে, গঞ্জাম-কান্ধামাল সীমানায় কলিঙ্গঘাট এলাকায় উল্টে যায় বাসটি। সেই সময় বাসের অধিকাংশ যাত্রীই ঘুমোচ্ছিলেন। ঘুমের মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৫ পর্যটকের।  আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় বেহেরামপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে আরও একজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্‍সকরা। এছাড়াও আহত হন ৪২ জন। 

সামনেই ছিল বিয়ে, তার আগেই গেল প্রাণ

ওড়িশায় ভয়াবহ বাস-দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়েছে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা, কলেজ ছাত্রীর। এই বছরই তাঁর বিয়ের কথা ছিল। বিয়ের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ পর্যায়ে... এই অবস্থায় তরুণীর মৃত্যুর খবরে শোকে ভেঙে পড়েছে পরিবার। মৃত্যু হল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের সুলতানপুরের বাসিন্দা রিমা দেঁড়ে-র। বছর ২০-র তরুণী উদয়নারায়ণপুর মাধবীলতা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।  মৃত্যু হয়েছে তরুণীর মায়েরও। রিমা দেঁড়ে, মৌসুমি দেঁড়ে ছাড়াও, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে, উদয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা, সুপ্রিয়া দেঁড়ে সঞ্জিত পাত্র, বর্ণালি মান্না ও স্বপন গুছাইতের।