সুজিত মণ্ডল, রানাঘাট (নদিয়া) : স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বৃদ্ধ ? বন্ধ ঘর থেকে বৃদ্ধ দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে এমনই অনুমান করছে পুলিশ। ঘটনার জেরে শোরগোল পড়ে গেছে নদিয়ার রানাঘাট থানা এলাকার কোর্ট পাড়ায়। বুধবার দুপুরে ঘরের দরজা ভেঙে পুলিশ দেহ দু'টি উদ্ধার করে। মৃত দম্পতির নাম হেমন্ত সরকার(৭২) ও তাঁর স্ত্রী প্রতিমা সরকার (৬৭)।


বুধবার সকাল থেকে বৃদ্ধ দম্পতির কোনও সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না প্রতিবেশীরা। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পরিচারিকা কাজ করতে এসে দেখেন ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। সন্দেহ হওয়ায় তিনি প্রতিবেশীদের জানান। প্রতিবেশীরা এসে ডাকাডাকি করে কোনও সাড়া পাননি। এরপর রানাঘাট থানায় খবর পৌঁছলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেহ দু'টি উদ্ধার করে। বিছানায় বৃদ্ধার নিথর দেহ এবং পাশের রান্নাঘর থেকে বৃদ্ধের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। ঘর থেকে একটি নোট উদ্ধার করেছে তারা। ভিন রাজ্যে কর্মরত একমাত্র ছেলেকে খবর দেওয়া হয়েছে। পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকা এবং আর্থিক অনটনের জেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা।


কোচবিহারে দম্পতির মৃত্যু-


গত বছর জুন মাসে দম্পতির (Couple Mysterious Death) রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কোচবিহারের (Coochbehar) মেখলিগঞ্জে। রানিরহাট এলাকার ঘটনা। ওই দম্পতিকে ঘরের ভিতরই মৃত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের লোকজন। 


কী ঘটেছিল?


পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত দম্পতির নাম রাজকুমার হরিজন এবং মঞ্জু হরিজন। সকালে বাড়ির বাকি সদস্যরা  রাজকুমার ও মঞ্জুকে ডাকাডাকি করলে কোনও শব্দ মেলেনি। বাধ্য হয়েই তাঁদের ঘরের দরজা বাইরে থেকে খুলে ঢোকেন তাঁরা। দাবি, তখনই নজরে আসে, ঘরের মেঝেয় মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই দম্পতি। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ। দেহ'দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। 


ওই বছরেই জুলাই মাসের একটি ঘটনাও নাড়া দিয়ে যায়। স্ত্রীর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরেই মৃত্যু হয় স্বামীরও। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে উত্তরপাড়ার হিন্দমোটর বিবিডি রোড এলাকায়। 


উত্তরপাড়ার হিন্দমোটর বিবিডি রোড এলাকার বাসিন্দা বছর ৫৭-এর প্রণব দাস এবং তাঁর স্ত্রী বছর ৫৪-এর মালঞ্চ দাস। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মালঞ্চ দাস। কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মালঞ্চ দেবী। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে কলকাতার একটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল, কিন্তু সেখানেই মারা যান তিনি। খবর পেয়ে এসেছিলেন পড়শিরা। তাঁরাই জানাচ্ছেন, স্ত্রীকে এভাবে হারিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মুষড়ে পড়েছিলেন। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন স্বামী প্রণব দাস। তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মারা যান প্রণব দাস। তখনও বাড়িতেই ছিল তাঁর স্ত্রীর দেহ।