কলকাতা: ওএমআর (OMR Sheet) মূল্যায়নকারী সংস্থার সার্ভারে একরকম নম্বর, অন্যদিকে কমিশনের সার্ভারে অন্যরকম নম্বর। গ্রুপ সি মামলায় কমিশনের হলফনামায় সামনে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।


কত পার্থক্য: ওএমআর মূল্যায়নকারী সংস্থার সার্ভারে নম্বর ৪০, কমিশনের সার্ভারে ১০! গ্রুপ সি মামলায় (Group C) কমিশনের হলফনামায় চাঞ্চল্য।


বিস্মিত বিচারপতি: এটা কী করে সম্ভব? প্রশ্ন বিস্মিত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। আদালতে কমিশন জানিয়েছে, 'সেই সময় কমিশনে থাকা ব্যক্তিরা অযোগ্যদের নিয়োগ করার জন্য এমনটা করে থাকতে পারে।'
 
৯ মার্চের মধ্যে গ্রুপ সি-র ওএমআর শিট প্রকাশ করার নির্দেশ আদালতের (High Court)। গাজিয়াবাদে সিবিআই-এর উদ্ধার করা ৩ হাজার ৪৭৮টি OMR Sheet প্রকাশ করার নির্দেশ। কমিশন হলফনামায় দাবি করেছে, ৩ হাজার ৪৭৮টির মধ্যে ৩০০টি ওএমআর বিকৃত করা হয়নি। সূত্রের খবর, পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জানান, 'এই দুর্নীতি নিয়ে সবথেকে ভাল বলতে পারবেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। কারণ সুবীরেশ ভট্টাচার্যই সেই সময় চেয়ারম্যান ছিলেন। সিবিআই-এর উচিত এদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা।


একেবারে ফাঁকা OMR শিট! প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার অংশে একটা কালির আঁচড় পর্যন্তও নেই! SSC-র গ্রুপ ডি মামলায় এমনই শূন্য পাওয়া প্রার্থীদের নম্বর গাজিয়াবাদের মূল্যায়নকারী সংস্থার হার্ডডিস্ক থেকে জাদুবলে কমিশনের ওয়েবসাইটে হয়ে গিয়েছিল ৪০-এর বেশি!


এবার গ্রুপ সি-র নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে এল কারচুপিরই আরেক রূপ! অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করতে, এবার যোগ্য প্রার্থীদের নম্বর কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল! এমনই ঘটনা জানিয়ে হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিল খোদ স্কুল সার্ভিস কমিশন। শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতির মামলার শুনানি ছিল। 


সেখানে OMR শিট বিকৃতি নিয়ে আদালতে হলফনামা জমা দেয় SSC। তা দেখে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বিস্ময়প্রকাশ করে বলেন, OMR মূল্যায়নকারী সংস্থা NYSA-র সার্ভারে একজন চাকরিপ্রার্থীর নম্বর ৪০। কিন্তু কমিশনের সার্ভারে তা ১০! এটা কী করে সম্ভব? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। 


উত্তরে SSC-র আইনজীবী বলেন, সেইসময় কমিশনে থাকা ব্যক্তিরা অযোগ্যদের নিয়োগ করার জন্য এমনটা করে থাকতে পারেন। এর আগে গ্রুপ ডি-র দুর্নীতি মামলায়, আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে সিবিআই দাবি করেছিল, মেধাতালিকায় প্রথম দশজনেরই প্রাপ্ত নম্বর শূন্য়!


গাজিয়াবাদে OMR শিট মূল্যায়নকারী সংস্থার অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া হার্ডডিস্কে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রত্য়েকে সাদা খাতা জমা দিয়েছেন! এইসব প্রার্থীদের নম্বরই এসএসসির সার্ভারে বেড়ে হয়ে গেছে ৪৩! এই প্রেক্ষাপটে এদিন গ্রুপ-সি মামলায় যোগ্য প্রার্থীদের নম্বর কমিয়ে দেওয়ার কথা কমিশনের হলফনামায় বলা হলে, ৯ মার্চের মধ্যে গাজিয়াবাদে মূল্যায়নকারী সংস্থার অফিস থেকে সিবিআইয়ের উদ্ধার করা ৩ হাজার ৪৭৮টি OMR শিট প্রকাশ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি।  সূত্রের খবর, স্কুল সার্ভিস কমিশনের হলফনামায় বলা হয়েছে, ৩ হাজার ৪৭৮টি OMR শিটের মধ্যে ৩০০টি OMR শিট বিকৃত করা হয়নি। 


এ নিয়ে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই দুর্নীতি নিয়ে সবথেকে বেশি বলতে পারবেন সুবিরেশ ভট্টাচার্য। কারণ তিনিই সে সময় SSC-র চেয়ারম্যান ছিলেন। সিবিআইয়ের উচিৎ, এদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা। আগামী ৯ মার্চ এই মামলার ফের শুনানি হবে।