সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: আজ বাংলার ঘরে ঘরে জামাইষষ্ঠী (Jamai Shashthi) পালনের দিন। জামাইয়ের পাতে বাজারের সেরা মন্ডা-মিঠাই থেকে আম (Mango)-ইলিশ (Hilsa) দেওয়ার দিন। সেই মতো কাল থেকেই শহর থেকে জেলার বাজারে তোড়জোড় শুরু। 


তবে জামাইষষ্ঠী বলে কথা। বাজারে আগুন তো হবেই। মাছ থেকে ফল, হাত ছোঁয়ালেই দামের ছেঁকা। জামাইয়ের পাতে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য বাজারে সব রকম মাছ মিলছে। কিন্তু জোগানে ঘাটতি থাকায় দাম চড়েছে। 


কীসের কত দাম? 



  • এক কেজির নিচে ইলিশের দাম ১২০০ টাকা। ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মিলছে ১৫০০ টাকায়। ইলিশের ওজন দেড় কেজির ওপরে হলে দাম পড়ছে ১৮০০-২ হাজার টাকা। 

  • গলদা চিংড়ি মিলছে ৭০০-৮০০ টাকায়। বাগদা হলে দাম পড়ছে ১২০০-১৫০০ টাকা। 

  • ভেটকির দাম বেশ চড়া। ৬০০-৬৫০ টাকা। 
    ৬০০-৬৫০ টাকা দামে পাওয়া যাচ্ছে পারশে বা পাবদা মাছ। 

  • ফলের বাজারও অগ্নিমূল্য। ভাল হিমসাগর বিকোচ্ছে ৮০-১২০ টাকায়। 

  • লিচু এক কেজি ২০০ টাকা। 
    ৪০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কালো জাম। 
    একটা কাঁঠাল ১০০ টাকা। 


তবে দাম যাই হোক, বছরের এই একটা দিন জামাই আপ্যায়নে পকেটের কথা চিন্তা করতে রাজি নন শ্বশুর-শাশুড়িরা। 
 



লোকদেবী মা ষষ্ঠী। বৈদিক শাস্ত্রে  মা ষষ্ঠীর উল্লেখ নেই বটে, কিন্তু বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে প্রায় নিত্য পূজিত তিনি। মানুষের বিশ্বাস, ষষ্ঠীর কৃপায় সন্তানের মঙ্গল হয়। বিভিন্ন ষষ্ঠী পালন করা হয় বিভিন্ন উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন মাসে, ‘ষষ্ঠীর থানে’ পুজো দেন মায়েরা। তাঁর কৃপায় নাকি সন্তান আসে কোলে। সন্তানরা সুস্থভাবে বড় হয়। বাংলার মায়েরা জামাইকে সন্তানের দৃষ্টিতেই দেখেন, তাই জামাইয়ের মঙ্গলকামনাতেও পালিত হয় একটি ষষ্ঠী। জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী পালন করা হয় জামাইয়ের জন্য । জ্যৈষ্ঠ মাসে শুক্লা পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে জামাই ষষ্ঠী। 


ষষ্ঠীর কোনও মূর্তি হয় না। লোকদেবী ষষ্ঠীর প্রতীক গাছে নিবেদন করা হয় পুজো।  জৈষ্ঠ্য মাসে বাংলার গাছগাছালি আম, জাম, লিচু, কাঁঠালে ভরে ওঠে ৷ তাই শাশুড়িরা ষষ্ঠীর দিন জামাইকে এই ফলের থালা সাজিয়ে দেন ৷  জামাইয়ের  কপালে মঙ্গলকারী দইয়ের ফোঁটা দিয়ে আশীর্বাদ করেন।  জামাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনায় মা ষষ্ঠীর তেল-হলুদের ফোঁটাও দেন। তেল-হলুদে ডুবিয়ে সুতো কবজিতে বেঁধে দেন শাশুড়ি-মা ৷ জামাইকে নতুন বস্ত্র উপহার দেওয়া হয় শ্বশুরবাড়ি থেকে। সেই সঙ্গে জামাইও শাশুড়িকে প্রণামী বস্ত্র দেন। জামাইকে আদরে খাওয়ান শাশড়িরা। এই সময়ে জামাইকে হাত পাখা দিয়ে পাখা দেওয়ার প্রথাও রয়েছে।