সৌমেন চক্রবর্তী, অমিতাভ রথ, কলকাতা: ১১ বছর আগে মামলার কারণেই, অম্বিকেশ মহাপাত্রর (Ambikesh Mahapatra) পাশাপাশি আর একজনের নাম চর্চায় উঠে এসেছিল। তিনি ঝাড়গ্রামের কৃষক শিলাদিত্য় চৌধুরী (Shiladitya Chowdhury)। সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করায় কপালে জুটেছিল মাওবাদী তকমা (Maoist Allegation)। আজও মামলার বোঝা বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাঁকে। অম্বিকেশ মহাপাত্রর মতো কবে মিলবে মুক্তি? সেই অপেক্ষায় বসে শিলাদিত্য় এবং তাঁর পরিবার।


সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করায় কপালে জুটেছিল মাওবাদী তকমা


দীর্ঘ ১১ বছর পর ব্য়ঙ্গচিত্রকাণ্ডের মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন অধ্যাপক অম্বিকেশ। সেই সময়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের এই অধ্য়াপকের পাশাপাশি আরও একটা নামও শিরোনামে উঠে এসেছিল শিলাদিত্য়র। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করে, পেশায় কৃষক, শিলাদিত্যর কপালে জুটেছিল মাওবাদী তকমা।


শুধু কি মাওবাদী তকমা! সঙ্গে হাজতবাসের অপমান এবং আতঙ্ক। জীবনের সেই অধ্যায় নিয়ে কথা বলতে গেলে আজও শিউড়ে ওঠেন শিলাদিত্য। বলেন, "দিদিকে প্রশ্ন করেছিলাম, ধানের দাম কম কেন, সারের দাম বেশি কেন! দিদি আমাকে মাওবাদী তকমা দিয়ে গ্রেফতার করান। দু'দিন পর বিনপুরে লকআপে পুরে দেয়।"


আরও পড়ুন: Defamatory Cartoon Case: বার বার রং বদলেছেন কার্টুন-চরিত্ররা, মামলার দাগ মুছতে ১১ বছর লাগল অম্বিকেশের

আজও সেই মামলার বোঝা বয়ে চলেছেন  শিলাদিত্য়। সেই দিন সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, কারণ তাঁর পেশা ছিল চাষবাস। এখনও সেই কাজই করেন তিনি। সংসার চালাতে মাঝে মাঝে বাসের হেল্পারের ভূমিকাতেও দেখা যায় তাঁকে। তাতে কোনও মতে দিন চলে। আর সেই জীবনেই কাঁটা হয়ে বিঁধে রয়েছে মাওবাদী তকমার মামলা।


এর মধ্যে অম্বিকেশের নিষ্কৃতী পাওয়ার খবর জানতে পেরে যদিও কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন শিলাদিত্য। প্রতিক্রিয়া চাইলে বলেন, "অম্বিকেশ ক্লিনচিট পেয়েছেন শুনে ভাল লাগল। আমাকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আশাকরি আমিও পাব। আমি প্রশ্ন করেছিলাম। বিচার চসছে। আমিও তো কোনও দোষ করিনি!" শিলাদিত্যর স্ত্রী খুকুমণি চৌধুরী বলেন, "অম্বিকেশ মুক্তি পেয়েছেন। আমি সরকারকে বলব, দিদিকে বলব, ওকেও ছেড়ে দিন।"

শিলাদিত্য়র মামলারও ১২ বছর পার হয়ে গিয়েছে। আদালত যেমন দিন ক্ষণ দিচ্ছেন, হাজিরা দিতে হচ্ছে। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলা আদালতে চলা মামলার কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না বলে দাবি করছেন শিলাদিত্যর আইনজীবী অশ্বিমী মণ্ডল বলেন, "বছরের পর বছর শুধুই ডেট পড়ছে।"


শিলাদিত্য়র মামলারও ১২ বছর পার হয়ে গিয়েছে

অম্বিকেশ মহাপাত্র মামলা থেকে অব্য়াহতি পেলেন। শিলাদিত্য়ও অপেক্ষায় রয়েছেন, কবে এরকম দিন আসবে তাঁর জীবনে। তত দিন অপমান আর হয়রানি বয়ে চলা ছাড়া কিছুই যে করার নেই।