বাচ্চু দাস, দার্জিলিং: প্রায় নিত্যদিন সীমান্তে মাদক থেকে শুরু করে দুর্লভ রত্ন উদ্ধার হয়। তবে সীমান্তেও যে আগ্নেয়াস্ত্রও (Fire Arms) যে ধরা পড়ে না, তা বললে ভুল হবে।  সাধারণত দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এই এলাকাগুলিতে চোরশিকারিদের উৎপাত। কখনও হাতির দাঁত, কখনও আবার বন্য প্রাণীর চামড়া-সহ তারা প্রায়সই ধরা পড়ে। কিন্তু এবার একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটল উত্তরবঙ্গে (North Bengal)। বাগডোগরা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মী হাতে ধরা পড়ল ৫ রাউন্ড গুলি-সহ এক ভুটানি নাগরিক। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি ভুটানের পারো বিমানবন্দর থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে চেন্নাই যাচ্ছিলেন। তখন প্রকাশ্যে আসে এই ঘটনা।


বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে , তাসি সেরিং নামে ৪৪ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তি কুয়েতে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করেন। তিনি ভুটান সেনাবাহিনীতে বছর চারেক কাজ করে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছিলেন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছেন এই ৫ রাউন্ড গুলি ভুটান সরকারের মালখানা থেকে হাতিয়ে ছিলেন তিনি। এরপরই ওই ব্যক্তিকে বাগডোগরা থানায় হস্তান্তরিত করেন । শুক্রবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে । বাগডোগরা থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।


 রাজ্যের এই বিমানবন্দরে সদাই কড়া নজর রাখে নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা।  দাঁতের ফাঁকে হিরে, পেনের রিফিলে-প্যান্টের বেল্টে হিরে  পাচার তো আকচার লেগে আছেই। সেই সঙ্গে কোটি কোটি টাকার মাদক পাচার থেকে শুরু করে সোনার বাট কিছুই যায় না বাদ। স্বাভাবিকভাবেই নজর রাখতে হয় বইকি। এমন কি তেজক্রিয় মৌল নিয়েও কম ঝক্কি পোয়াতে হয়। একেবারে এই কলকাতা বিমানবন্দর থেকেই একবার উদ্ধার হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়াম। উদ্ধার হওয়ার সেই ক্যালিফোর্নিয়ামের বাজারদর ছিল ৪ হাজার কোটির টাকার উপরে। দামী তো বটেই, তার থেকেও বড় কথা জনসমক্ষে একেবারে তেজক্রিয় মৌল ! তাই সদাই চোখটা খোলা রাখেন বিমানবন্দরের কর্মীরা। আর এবার ধরা পড়ল শুল্ক ফাঁকি দেওয়া ২৭টি সোনার কয়েন ও ৩টি সোনার বাট।


আরও পড়ুন, ফের ভিজবে পাহাড় ? আগামীকাল কেমন আবহাওয়া থাকবে উত্তরবঙ্গে ?


প্রসঙ্গত,গতবছর জুলাই মাসে, একটি বড়সড় পাচার করতে গিয়ে পর্দা ফাঁস হয়। শুল্ক দফতর সূত্রে খবর,  কলকাতা বিমানবন্দরে দুবাই ফেরত এক ভারতীয় যাত্রী গ্রিন চ্যানেল দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে চ্যালেঞ্জ করেন শুল্ক দফতরের অফিসাররা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তল্লাশি করতেই উদ্ধার হয় ১০ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা মূল্যের বেআইনিভাবে আনা সোনা। একইদিনে আরও একটি ঘটনা ঘটে কলকাতা বিমানবন্দরে। ঢাকা থেকে আসা এক বাংলাদেশি যাত্রীও গ্রিন চ্যানেল দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁকে তল্লাশি করে উদ্ধার হয়েছে ৪০ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা মূল্যের সোনা। দুই ব্যক্তিকেই গ্রেফতার করা হয়। তবে গত কয়েক মাসে কলকাতায় বিমানবন্দর বা বিভিন্ন দোকানে শুল্ক দফতরের তল্লাশিতে একাধিক বেআইনি দ্রব্য উদ্ধার হয়েছে ।