দীপক ঘোষ, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : নরেন্দ্রপুরে স্কুলে হামলার দিনই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। শেখ শাহজাহানকাণ্ডের নিন্দা শোনা গেছে পুরমন্ত্রীর গলায় ! কিন্তু , তারপরেও কোনও কড়া পদক্ষেপ হয়নি। না শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হয়েছেন, না স্কুলে হামলাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তদের ধরা গেছে ! এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি কাজে আর কথায় ফারাক থেকে যাচ্ছে শাসক দলের ?


সন্দেশখালিতে ইডিকে মার ! নরেন্দ্রপুরে স্কুলের মধ্য়ে ঢুকে শিক্ষকদের মার ! কোথাও অভিযুক্ত তৃণমূলের দাপুটে নেতা শেখ শাহজাহান, কোথাও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য়। এরপর শাসক দলের হেভিওয়েট নেতাদের কয়েকজন এই ঘটনাগুলোর সমালোচনা করছেন।

নরেন্দ্রপুরে স্কুলে হামলা প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'যদি হয়ে থাকে, দুর্ভাগ্যজনক। প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সে যেই হোক। দেখুন আমি আমার স্ট্যান্ড অত্যন্ত ক্লিয়ার। আমি বলছি, কোথাও যদি কেউ কোনওরকম, কোনও অপকর্ম, কোনওরকম কোনও দুর্নীতি, কোনওরকম কোনও গা-জোয়ারি, কেউ যুক্ত থাকে, সে তৃণমূলের হোক, বিজেপির হোক, কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিত।'


শেখ শাহজাহান প্রসঙ্গে পুরমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম মন্তব্য করেছিলেন, 'যা দেখলাম টিভিতে মাথা ফাটিয়েছে। অন্যায় করেছে।'

অন্যদিকে, নরেন্দ্রপুরে স্কুলে হামলা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, 'কারা মেরেছে ? হান্ড্রেড পার্সেন্ট। কাউকে ছাড়া হবে না। কাউকে ছাড়া হবে না। আমি এটা জানতাম না। আমি এখনই রিপোর্ট তলব করব এবং যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।'

কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন হল, শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থেকে মন্ত্রীরা বারবার কড়া বার্তা দিচ্ছেন ! কিন্তু মূল অভিযুক্তরা ধরা পড়ছেন কই ?


সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কল্লোল মজুমদার বলেন, "এলাকার মস্তানদের এমন মাথায় তুলেছে, তারা ভিসিকে জগ ছুড়ে মারা দিয়ে শুরু করেছিল। প্রধান শিক্ষকের উস্কানিতে সমস্ত শিক্ষকে মারধর করবে, এখন এই সাহসটা অর্জন করেছে। "


রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী তো আজ বলেছেন এক শতাংশ দুর্নীতি থাকলে সেটাকে দুর্নীতি বলা যায় না। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যখন একবার নারদাকে কেন্দ্র করে বলেছিলেন, এঁদের জানলে আগে টিকিট দিতাম না। পরে তাঁদের মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন। যাদের তিনি বোমাবাজ বলে চিহ্নিত করে দেন, তাঁদের তিনি বিধায়ক বানিয়ে দেন। এটাই তো তৃণমূল।"


সব মিলিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।