কলকাতা : অব্যাহত পদ্ম-পুরস্কার নিয়ে বিতর্ক। "বারবার নাম পরিবর্তন এবং পট পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যিনি চলেছেন তিনি যত প্রতিভাবানই হোক না কেন, আমার মনে হয় অন্তত তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্য বাংলার মানুষ গুরুত্ব দিয়ে শুনবে না।" এই ভাষাতেই কবীর সুমনকে পাল্টা আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য (Sameek Bhattacharya)।


গতকাল ‘পদ্মশ্রী’ (Padma Shri) প্রত্যাখ্যান করেন প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীত শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukhopadhyay)। এনিয়ে আজ সাংবাদিক বৈঠকে কবীর সুমন বলেন, "বিদ্বেষ থেকে পদ্মশ্রী দেওয়া হয়েছে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। শ্বেতাঙ্গরা অন্তত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নোবলে পুরস্কারটা দিয়েছিলেন। সেখানে তাঁরা অন্য কিছু বিচার করেননি। এই শহরে দুই জন বসে আছেন যাঁরা পদ্মভূষণ পাওয়া। তাঁদের কেরিয়ারটা দেখুন। আর সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কেরিয়ারটা দেখুন। কী কী ধরনের গান গেয়েছেন উনি। খুব খারাপ লাগছে। এই বয়সে এসে ধাক্কা খেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।"


তাঁর এই বক্তব্যের পাল্টা খোঁচা দিয়ে শমীক বলেন, "এখানে বাঙালি সাজার প্রতিযোগিতা চলছে। এই পুরস্কার তো কোনও দলের দেওয়া পুরস্কার নয়। এই পুরস্কার কোনও রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়। এই পুরস্কার নির্ধারণের জন্য নির্দিষ্ট একটি কমিটি আছে। এই পুরস্কার ভারত সরকারের পুরস্কার। এই পুরস্কার নিয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া, তাকে সমালোচনা করা, তাকে চ্যালেঞ্জ করা কার্যত দেশের মর্যাদাকেই ক্ষুণ্ণ করে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, এনিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। কবীর সুমন আজ বক্তব্য রেখেছেন। একজন প্রতিভাবান শিল্পী। একটা সময় যখন বাংলা গান, গানের বদলে বাজনা-গান হয়ে গিয়েছিল, তখন তাকে যিনি গানবাজনায় ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলেন তাঁর নাম সুমন চট্টোপাধ্যায়। এখন কবীর সুমন বা সুমন চট্টোপাধ্যায়, যে নামেই আপনি ডাকুন না কেন তাঁকেও মনে রাখতে হবে, উলুবেড়িয়ার পরের স্টেশনটার নাম সাইবেরিয়া নয়। তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন। তিনি কী কী বলেছেন ক্যামেরার সামনে, সেগুলোও যেমন আর্কাইভে রাখা আছে। তিনি কীভাবে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে রাষ্ট্রপতি করা উচিত বলে প্রথম পদক্ষেপ দিয়ে নিজে ভোট দিতে যাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরে সিদ্ধান্ত বদলে নির্দেশ দিলেন যে, প্রণব মুখোপাধ্য়ায়কেই ভোট দেব। তখন কিন্তু উনি বিধানসভা পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি। আপনারা প্রশ্ন করেছিলেন ওঁকে, কেন এলেন না। উনি, তাঁর উত্তরে বলেছিলেন, আমার অনুরাগীরা বলেছেন , আমি ওখানে গেলে আক্রান্ত হতে পারি। এধরনের যাঁর রাজনৈতিক অবস্থান, বারবার নাম পরিবর্তন এবং পট পরিবর্তনের মধ্যে দিয়েই যিনি চলেছেন, তিনি যত প্রতিভাবানই হোক না কেন, আমার মনে হয় অন্তত তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্য বাংলার মানুষ গুরুত্ব দিয়ে শুনবে না, তাঁর দলই শুনবে না। যে দলে তিনি ছিলেন। আর এখন অন্য মানুষও শুনবে না।"