নদিয়া: কালিয়াগঞ্জকাণ্ডের (Kaliaganj) ছায়া এবার নদিয়ার (Nadia) গাংনাপুর (Gangnapur), ফের আক্রান্ত পুলিশ। ভোটের (panchayat Election 2023) ডিউটিতে গিয়ে আক্রান্ত কলকাতা পুলিশের ২ কনস্টেবল। নদিয়ার গাংনাপুরের বুথের বাইরে গণপিটুনির শিকার কনস্টেবল! পুলিশকে গণপিটুনি, ভাঙল হাত, থেঁতলে গেল শরীরের বিভিন্ন অংশ। বুথের সামনেই পুলিশকে বেধড়ক মার, প্রাণ বাঁচাতে বাড়িতে আশ্রয়। একজন খাটের নীচে লুকিয়ে বাঁচলেও, রেহাই পেলেন না আরেক কনস্টেবল। মাটিতে ফেলে বাঁশ, লাঠি দিয়ে কলকাতা পুলিশকর্মী রাজু দাসকে বেধড়ক মার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি কনস্টেবল। পালিয়ে একটি বাড়িতে ঢুকে খাটের তলায় লুকিয়ে প্রাণ বাঁচালেন আরও ১ কনস্টেবল। বুথে ঢুকে তৃণমূলের ছাপ্পা, জনরোষের শিকার পুলিশ, দাবি সিপিএমের। একজন পালিয়ে যাচ্ছিল, ছেড়ে দেওয়ায় জনরোষের গণপিটুনি, দাবি সিপিএমের। পুলিশের হামলায় জড়িত বাম-বিজেপি, পাল্টা অভিযোগ তৃণমূলের কনস্টেবলের উপর হামলায় অস্ত্র-সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ধৃতদের জেল হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। 


বোমা-গুলি-সংঘর্ষের এই ছবি বাংলার পঞ্চায়েত ভোটের কার্যত ট্রেডমার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে! যার অন্যথা হয়নি সদ্য সমাপ্ত তেইশের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও! কিন্তু এবার সামনে এল ভয়ঙ্কর অন্য এক দৃশ্য! যাঁদের ওপর ভোটের নিরাপত্তার একটা বড় দায়িত্ব ছিল, সেই পুলিশকেই কিনা মারা হল রাস্তায় ফেলে!


ঘটনার সূত্রপাত, ৮ জুলাই সকালে। নির্ধারিত সময়েই ভোট শুরু হয়েছিল নদিয়ার গাংনাপুর থানার দেবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের কোরাবাড়ি কালীদাস প্রাথমিক স্কুলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ হঠাৎ তৃণমূল আশ্রিত দুষকৃতীরা বুথে চড়াও হয়। শুরু হয় দেদার ছাপ্পা। একজন সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে সেই বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন কলকাতা পুলিশের সিক্সথ ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল রাজু দাস। ভয়ে সকুলের ছাদে উঠে যান তিনি।

অভিযোগ, দেদার ছাপ্পা দিয়ে দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পর, বুথে চড়াও হয় একদল গ্রামবাসী। তাঁরাই চড়াও হয় পুলিশ কনস্টেবল রাজু দাসের ওপর। কিন্তু বুথের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ কনস্টেবলের ওপর জনরোষ গিয়ে পড়ল কেন? স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ছাপ্পা দিয়ে পালানোর সময় একজনকে ধরে ফেলেন এলাকাবাসী। তাঁকে ঘটনাস্থলের কাছে থাকা আরেক পুলিশ অফিসারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, কিছুদূর গিয়েই ওই দুষ্কৃতীকে ছেড়ে দেন ওই পুলিশ অফিসার।


একদিকে যখন এই ঘটনা ঘটছে, তখন অন্যদিকে তাণ্ডব চলে বুথের ভিতর। ব্যালট বক্স ছুড়ে ফেলা হয় ডোবায়। ঘটনার পর স্থানীয় এক ব্যক্তি গুরুতর জখম রাজু দাসকে বাইকে করে গাঙনাপুর থানায় পৌঁছে দেন। বর্তমানে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে সোমবার গাংনাপুরের এই বুথে পুনর্নির্বাচন হয়।