কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পেশের প্রথম দিনে, সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপির প্রার্থীরা। দ্বিতীয় স্থানে সিপিএম ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল। প্রথম দিনে বীরভূম, জলপাইগুড়িতে মনোনয়ন জমা দিলেন না তৃণমূলের কোনও প্রার্থী। অন্যদিকে প্রচার নিয়ে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।


সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন জমা: আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য, মোট ৬ দিনে, মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এত অল্প সময় দেওয়ায়, তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এমনকী এই সময়সীমা বাড়ানোর দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেস। কিন্তু, মনোনয়ন পর্বের প্রথম দিনেই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্যে। শুক্রবার মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যেই জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতে,সবচেয়ে বেশি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে বিজেপি। সংখ্যাটা ৬৭৭। এর পরই রয়েছে সিপিএম, ৩৬০। তৃতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল। তাদের ১৯৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। চতুর্থ স্থানে রয়েছে কংগ্রেস। তাদের ৬৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন পেশ করেছেন।

গরু পাচার মামলায় তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন, বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু তাঁকে ছাড়াই ওই জেলায় মাটি ধরে রাখতে, ঝাপিয়ে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল। কিন্তু, শুক্রবার বীরভূমে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন না তৃণমূলের কোনও প্রার্থী। যেখানে তিন স্তরে মোট ১২১টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন বিজেপির প্রার্থী। শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি আসনে মনোনয়ন পেশ করেছে সিপিএম।

একই ছবি ধরা পড়েছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে। ওই জেলাতেও প্রথম দিনে তৃণমূলের কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেননি। সেখানেও সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন দিয়েছে বিজেপি। এদিকে শুক্রবারই পঞ্চায়েত ভোট প্রচারের নিয়মবিধি জারি করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, কোনও মোটরবাইক ও সাইকেল র‍্যালি করা যাবে না। আপত্তিকর কোনও সামগ্রী নিয়ে সভা ও মিছিলে সামিল হওয়া যাবে না। কোন কোন শর্তে রাজনৈতিক দলগুলিকে মিটিং- মিছিলের অনুমতি দেওয়া হবে, শুক্রবার সেই নির্দেশনামা রাজ্যের সব পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের পাঠিয়েছে কমিশন। বলা হয়েছে,  একটি থানা এলাকায় কোনও রাজনৈতিক দল বা তাদের প্রার্থী, দিনে সর্বাধিক তিনটি সভা করতে পারবেন। সভা ও মিছিলের জন্য, অন্তত ৩ দিন আগে থানা থেকে অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে হবে। সকাল ১০ থেকে রাত ৮টার মধ্যে আবেদনপত্র থানায় জমা দেওয়া যাবে। আগে যে দল আবেদন করবে, তারাই পাবে অগ্রাধিকার। এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য রেজিস্টারে নথিবদ্ধ করবেন ওসি।  শুধুমাত্র আবেদনপত্র জমা দিলেই হবে না, ওসি-র অনুমতি মিললে, তবেই করা যাবে সভা ও মিছিল।

৫ বছর আগে এক দিনের পঞ্চায়েত ভোটে,একাধিক অশান্তির ছবি উঠে এসেছিল জেলায় জেলায়। প্রাণ গেছিল বহু। এই প্রেক্ষাপটে, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটও এক দফাতেই করতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, সীমিত সংখ্যক পুলিশ দিয়ে কীভাবে এক দিনে গোটা রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হবে? যে কারণে, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোরও দাবি তুলেছে বিজেপি ও কংগ্রেস। এই সমস্ত দাবি দাওয়ার মধ্যেই, শুক্রবার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা। কমিশনের তরফে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে হবে। কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করবে না কমিশন।


আরও পড়ুন: Diabetes in India: চোখ রাঙাচ্ছে ডায়াবেটিস! গোয়ায় সর্বোচ্চ, ICMR রিপোর্টে বাংলার ছবিটা কী?